Headlines
Loading...
 ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার সবচেয়ে বড় কারণ

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার সবচেয়ে বড় কারণ

 ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার সবচেয়ে বড় কারণ

ডায়াবেটিস রোগটিকে আমরা সবাই ভয় পাই। ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার জন্য আমরা অনেকে অনেকভাবে চেষ্টা করি। তবু ডায়াবেটিস থেকে অনেকেই বাঁচতে পারি না। এর একটি প্রধান কারণ, ডায়াবেটিসের সঠিক কারণ আমাদের জানা নেই।

অনেকেই মনে করেন ডায়াবেটিস একটি বংশগত রোগ। পূর্বপুরুষদের কেউ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকলে সন্তানরাও এই রোগে নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত হয়, রক্ষা পায় না কোনোভাবে। যখন তারা দেখেন তাদের পূর্বপুরুষদের কেউ এই রোগে আক্রান্ত ছিল, তখন তারা ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার ব্যাপারে হতাশ হয়ে যান। ডায়াবেটিস প্রতিরোধের কোনো চেষ্টা করেন না। একসময় তারা ডায়াবেটিস আক্রান্ত হয়ে পড়েন।

আবার অনেকে মনে করেন মিষ্টি বা চিনি খেলে মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়। এটা বিশ্বাস করার কারণে তারা মিষ্টি খাওয়া ছেড়ে দেন বা কমিয়ে দেন। কিন্তু ডায়াবেটিস প্রতিরোধে অন্য কোনো ব্যবস্থা নেন না। ফলে একসময় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে পড়েন।

আবার অনেকে মনে করেন টেনশনে মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়। এই জন্য যখন দেখেন তার জীবনে অনেক টেনশন রয়েছে বা তাকে বিভিন্ন সময় টেনশন করতে হয়, তাই ডায়াবেটিস থেকে বেঁচে থাকা তার পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এটা ভেবে তারা নিজেকে ডায়াবেটিসের নিকট সঁপে দেন। ডায়াবেটিস প্রতিরোধের কোনো চেষ্টা করেন না এবং এক সময় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে পড়েন।

মূলত বংশগত কারণে বা মিষ্টি খাওয়ার কারণে বা টেনশন করার কারণে কেউ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয় না। মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয় নিয়মিত পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম না করলে। যেসব মানুষ নিয়মিত পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম করে থাকেন, তারা কোনোভাবেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন না। আর যারা শারীরিক পরিশ্রম থেকে দূরে থাকেন, তারাই ব্যাপকহারে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন।


যারা নিয়মিত পর্যাপ্ত কায়িক শ্রম করেন, তাদের পূর্বপুরষরা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকলেও তারা ডায়াবেটিস থেকে নিরাপদ থাকেন; তারা চিনি বা মিষ্টি বেশি খেলেও ডায়াবেটিস তাদেরকে আক্রমণ করতে পারে না; তাদের জীবনে অনেক টেনশন থাকলেও তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন না।

যারা শারীরিক পরিশ্রম থেকে দূরে থাকেন বা থাকতে পছন্দ করেন, তাদের পূর্বপুরুষদের কেউই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত না হয়ে থাকলেও, তারা মিষ্টি খাওয়া পুরোপুরি বাদ দিলেও, তাদের জীবনে টেনশন মোটেও না থাকলেও তারা ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা পান না।


এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা সম্পর্কে যারা অবহিত নন, তারা ‘পায়েচালিত’ একশত জন রিকশাচালকের খবর নিন, দেখবেন যেসব রিকশাচালক বিশ বছরের বেশি সময় ধরে নিয়মিত ‘পায়েচালিত’ রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন, তারা প্রায় সবাই ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত।


যারা পেশাদারভাবে ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন ইত্যাদি বিভিন্ন শারীরিক শ্রমনির্ভর খেলা খেলে যাচ্ছেন পনেরো বছরের বেশি সময় ধরে, দেখবেন, তাদের অনেকে মিষ্টি বা শর্করাজাতীয় খাবারও খেয়ে থাকেন, তবু তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নন।

এমন অনেক মানুষ আপনি এখনো খুঁজে পাবেন, যাদের বাবা—মা কেউ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন না, তবু তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। জীবনে তেমন কোনো টেনশন নেই, সুখী জীবন যাপন করছেন, এমন অসংখ্য মানুষও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।


কায়িক শ্রমের বিভিন্ন পেশায় যারা নিয়োজিত, তাদের অনেকেই মিষ্টি খেয়ে থাকেন, অনেকের জীবনে প্রচুর টেনশনও থাকে এবং অনেকের পূর্বপুরুষদের মধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী থাকা সত্ত্বেও তারা ডায়াবেটিস থেকে নিরাপদ থাকাটা প্রমাণ করে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার সবচেয়ে বড় কারণ শারীরিক পরিশ্রম থেকে দূরে থাকা।


তাই যারা ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে চান, অন্যসব প্রচেষ্টা বাদ দিয়ে নিয়মিত কায়িক শ্রম করুন, আপনি যতোদিন নিয়মিত পর্যাপ্ত কায়িক শ্রম করবেন, ততদিন ডায়াবেটিস থেকে পুরোপুরি নিরাপদ থাকবেন, কোনো সন্দেহ নেই। এই সত্য অস্বীকার করে ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার আশা করা বৃথা।

নিয়মিত পর্যাপ্ত কায়িক শ্রম করুন। ডায়াবেটিস থেকে বেঁচে থাকুন, স্বাভাবিক জীবন যাপন করুন। ধন্যবাদ।

Occupation: Teaching, Hobbies: Writing

0 Comments: