Headlines
Loading...
চিনিকে অহেতুক ভয় পাবেন না

চিনিকে অহেতুক ভয় পাবেন না

 ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের সাথে চিনি ও লবণের সম্পর্ক

নূর আহমদ : শিক্ষক; কলামিস্ট ও গবেষক

শৈশব থেকে শুনে আসছি, চিনিকে সাইলেন্ট কিলার, হোয়াইট পয়জন, সুইট পয়জন ইত্যাদি বলা হয়। কেন, চিনি খেলে কি কোনো রোগ হয় বা কোনো ক্ষতি হয়? চিনি কিভাবে বিষ?

বিশ্বব্যাপী একটি ধারণা প্রায় প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে, চিনি/মিষ্টান্ন খেলে ডায়াবেটিস হয়। চিনি/মিষ্টান্ন খেলে উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগ হবার কথাও বিশ্বব্যাপী প্রচারিত হচ্ছে।

‘চিনির ক্ষতিকর দিক’ শিরোনামে ডা. সঞ্চিতা বর্মন লিখিত একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয় ০৭ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখের দৈনিক ইত্তেফাকে। সেখানে বলা হয়, ‘গবেষণায় দেখা গেছে, যারা খাবারে অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টি জাতীয় পানীয় বেশি খায় তাদেরই হৃদরোগ, ডায়াবেটিস টাইপ ২, উচ্চ রক্তচাপ, ওবেসিটি বা স্থূল দেহ এবং বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ শরীরের মেটাবলিজম প্রক্রিয়াকেও বিঘ্ন ঘটায়।’

‘চিনি খাওয়া কি খারাপ?’ শিরোনামে বাংলাদেশের জনপ্রিয় টেলিভিশন এনটিভির ওয়েবসাইটে ৪ আগস্ট ২০১৫ তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের ডিন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘সাধারণত মানুষ স্বাভাবিক চিনি খেলে ভালো। তবে চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার বেশি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য সমস্যা তৈরি করে। যাদের পারিবারিকভাবে প্রবণতা রয়েছে ডায়াবেটিস হওয়ার, তাদের চিনি কম খাওয়া ভালো। এবং মাঝেমধ্যে শরীরের শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করা প্রয়োজন। এ ছাড়া চিনি ওজন বাড়িয়ে দেয়। যাদের ওজন বেশি, তারা চিনি খাওয়া এড়িয়ে যাবে। ওজনাধিক্য লোকদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা বেশি থাকে।’

‘কেন সাদা চিনি এড়িয়ে চলবেন’ শিরোনামে ২৮ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে প্রথম আলোয় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে গ্রীন লাইফ মেডিকেল কলেজের (ঢাকা) এন্ডোক্রাইনোলজি ও মেটাবলিজম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. তানজিনা হোসেন বলেন, ‘সাদা চিনি কি সত্যি খারাপ? তবে কেন আমরা বলি যে গ্লকোজ বা চিনিই হলো শরীরের সব শক্তির উৎস বা চিনি খেলে বুদ্ধি বাড়ে? আসলে এখানে যে চিনির কথা বলা হচ্ছে তা সাদা চিনি নয়, এই চিনির অর্থ শর্করা। সুষম খাবারের ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ শর্করা হলেও আপত্তি নেই। কিন্তু সেই শর্করা জটিল শর্করা হতে হবে। আমরা যা সচরাচর রোজ খাই- ভাত, রুটি, শস্যজাতীয় খাবার, ফলমূল, নানা ধরনের সবজি- এগুলোতে লুকিয়ে আছে অনেক চিনি বা শর্করা। এই খাবারগুলো হজম হওয়ার পর ভাঙতে ভাঙতে গ্লুকোজে পরিণত হয়।
গ্লুকোজ থেকে আমরা প্রয়োজনীয় শক্তি সংগ্রহ করি। সাদা চিনি কিন্তু তা নয়। সাদা চিনি হলো সুক্রোজ, যা ভাঙার প্রয়োজন হয় না, দ্রুত রক্তে মিশে যায় এবং রক্তে চিনির পরিমাণ দ্রুত বাড়িয়ে দেয়। আমাদের মেটাবলিক সিস্টেম এই চিনিকে সামলে উঠতে পারে না এ কারণে যে আদিকালে কোনো চিনি ছিল না, শর্করার উৎস ছিল শস্য বা ফলমূল আর এই জন্যে মেটাবলিক সিস্টেম সেভাবে গড়ে ওঠেনি আমাদের শরীরে। তো এই বাড়তি চিনি তখন একধরনের চর্বি (ট্রাইগ্লিসারাইড) হিসেবে শরীরে জমা হতে থাকে। তাই সাদা চিনি খেলে কেবল ওজন এবং শর্করা বাড়ে তা–ই নয়, চর্বিও বাড়ে। ফলে দেখা দেয় স্থূলতা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ফ্যাটি লিভারসহ অনেক কিছু।’

ডায়াবেটিসের সাথে চিনির সম্পর্ক

প্রথমে ডায়াবেটিসের সাথে চিনির সম্পর্কের কথায় আসি। হ্যাঁ, ডায়াবেটিসের সাথে চিনির নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। অন্তত যাদের ডায়াবেটিস, তারা জানেন, চিনি বা চিনির তৈরি খাবার খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যায়। আবার ডায়াবেটিস কখনো খুব কমে গেলে চিনি খেলে ধীরে ধীরে ব্যালেন্সে চলে আসে। অর্থাৎ ডায়াবেটিসের সাথে চিনির সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। তবে..., তবে এ সম্পর্ক শুধুই ডায়াবেটিস দেখা দেবার পর, আগে নয়। ডায়াবেটিস হবার আগে যতো চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়া হোক না কেন, তাতে ডায়াবেটিস হবে না, যদি নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রমের সাথে সম্পর্ক রাখা যায়।

চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার অল্প বা বেশি খাওয়ার কারণে কোনো রোগই হয় না। মিষ্টান্ন বেশি খেলে শুধু শিশুদের পেটে কৃমি হতে পারে, একটু ঔষধেই যা সেরে যায়। এছাড়া যে রোগগুলোর জন্য অনেকে চিনিকে দায়ী করে থাকেন সেগুলো হয় মূলত মুটিয়ে যাওয়া, শরীরে অতিরিক্ত চর্বি-কোলেস্টেরল হওয়া, পরিশ্রমশূন্য জীবন যাপন করা আর বেশি বেশি খাওয়ার কারণে। শারীরিক পরিশ্রম যারা নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে করে এবং শরীরে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল হতে দেয় না, তারা চিনি বা মিষ্টান্ন যতো বেশিই খাক না কেন, এমন কোনো রোগে আক্রান্ত হবে না, যেসব রোগ হওয়ার পর চিনি খাওয়া যায় না। কথাটির সত্যতা পরীক্ষার জন্য অসংখ্য উদাহরণ খুঁজে পাওয়া যাবে আমাদের আশপাশেই।

ইলিশ, গরুর মাংস, বেগুন ইত্যাদি খেলে যেভাবে যাদের এ্যালার্জি বা চুলকানি আছে, তাদের এ রোগ বেড়ে যায়, কিন্তু যাদের এরকম রোগ নেই, তাদের কিছুই হয় না, একইভাবে চিনি খেলে কিছু কিছু রোগে আক্রান্ত মানুষের ক্ষতি হয়, কিন্তু যাদের কোনো রোগ নেই, তাদের কিছুই হয় না। অহেতুক চিনিকে নীরব ঘাতক, সাদা বিষ, মিষ্টি বিষ ইত্যাদি বলে অপবাদ দেয়া সম্পূর্ণ ভুল। নীরব ঘাতক বা ছদ্মবেশী বিষ, বন্ধুরূপী শত্রু তো বলা উচিত দেহের চর্বি আর রক্তের কোলেস্টেরলকে, কারণ এগুলোই আমাদের বন্ধু সেজে আমাদেরই সামনে দিয়ে আমাদের দেহে প্রবেশ করে আমাদেরকে এমন সব রোগের মুখে নিক্ষেপ করে, যেগুলো আমাদেরকে বেশিদিন পৃথিবীতে বাঁচতে দেয় না, কোনোরকমে ক’দিন বেঁচে থাকলেও মনমতো খাওয়ার সুযোগ দেয় না, জীবনকে কঠিন করে তোলে এবং দ্রুত মৃত্যু পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। শরীরে মেদ-চর্বি-কোলেস্টেরল না হলে এসব রোগ হয় না, আর এসব রোগ না হলে চিনি আমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারে না। তাই চিনিকে ডায়াবেটিস সৃষ্টির জন্য দায়ী করা কখনোই উচিত নয়।

চিনি/মিষ্টান্ন খেলে সত্যিই ডায়াবেটিস হয় কিনা, এ ব্যাপারে প্রথমে দেখুন জার্মানীর জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম ডয়চে ভেলের ওয়েবসাইটে ০৭ মে ২০১৮ তারিখে প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারের অংশ বিশেষ। ডয়চে ভেলেকে সাক্ষাৎকারটি দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাকা) সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম। ডয়চে ভেলের প্রশ্ন ছিল: মিষ্টির ভালো-খারাপ দু’টো দিকই আছে। শুরুতে এটা নিয়ে একটু বলুন...

ডা. শাহজাদা সেলিম উত্তরে বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারত বা পাকিস্তানেও আর্কষণীয় একটি খাদ্য উপাদান হলো মিষ্টি। এ দেশগুলোয় যত সামাজিক বা ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়, সবখানেই মিষ্টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। মিষ্টি ছাড়া এসব জায়গায় কোনো অনুষ্ঠানই হয় না। তবে আমরা যদি পুষ্টির বিষয়টা বিবেচনায় আনি, তাহলে মিষ্টির খারাপের দিকটাই বেশি। ভালো দিকটা কম। মিষ্টি অতি দ্রুত খাদ্যে গ্লুকোজ সরবরাহ করে। আর আমাদের শরীরে যে জ্বালানি সরবরাহ হয়, সেটা মূলত গ্লুকোজ থেকেই আসে।  অনেকেই দিনে ৩-৪ বার খাবার খান। আবার ডায়াবেটিস রোগীদের দিনে ছ'বারও খেতে বলি আমরা। কম বয়সিরাও বেশি বার খায়। তবে এর অর্থ এই নয় যে, বেশি মিষ্টি খেয়ে রক্তে গ্লুকোজ তৈরি করতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে মানুষের ওজন বেড়ে যাচ্ছে। এর পেছনে কিন্তু মিষ্টি জাতীয় খারারের একটা হাত আছে। এছাড়া অন্যান্য খাবারও আছে। অনেকে প্রশ্ন করেন, মিষ্টি খেলে ডায়াবেটিস হয় কিনা। এর সরাসরি উত্তর দেয়া সম্ভব নয়। তবে যাঁদের ডায়াবেটিস হয়নি, তাঁদেরও উচ্চতা অনুযায়ী ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আর ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে মিষ্টি জাতীয় খাবার কমিয়ে আনতে হবে।’

এখানে বলা হয়েছে, ‘মিষ্টি খেলে ডায়াবেটিস হয় কিনা’, প্রশ্নটির সরাসরি উত্তর দেয়া সম্ভব নয়।

বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল আরটিভির অনলাইনে ‘মিষ্টি খেলে কি ডায়াবেটিস হয়?’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮। সেখানে বলা হয়, ‘বেশি মিষ্টি খেয়ো না, ডায়াবেটিস হবে- এই কথাটি আমরা অনেক শুনি। কিন্তু আসলেই কী মিষ্টি খেলে ডায়াবেটিস হয়? প্রশ্নটির উত্তর আমাদের অনেকেরই জানা নেই।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস ফুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ডায়াবেটিসের জন্য শুধু সুগারই দায়ী নয়। পুরো জীবনধারণ প্রক্রিয়ার কারণে রোগটি হয়ে থাকে। অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিভিন্ন ধরনের খাবার গ্রহণের ফলে রক্তে গ্লুকোজের উপস্থিতি বেড়ে যায়। সেখান থেকেই ডায়াবেটিসের শুরু হয়।
ডায়াবেটিস সম্পর্কে মুম্বাইয়ের পুষ্টিবিদ কাজল ভাতেনা বলেন, মিষ্টি খেলেই যে ডায়াবেটিস হবে, এমন নয়। তবে যারা খুব বেশি পরিমাণে মিষ্টি খায় এবং কোনও ধরনের পরিশ্রম করে না, তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি। কাজল আরও বলেন, আপনি যদি প্রতিদিন মিষ্টি খেয়ে সঠিক নিয়ম মেনে পরিশ্রম করেন তাহলে ওই মিষ্টি আপনার কোনও ক্ষতি করবে না। তবে আপনি অলস হলে মিষ্টি কম খাওয়া কিংবা না খাওয়াই ভালো।’

ডায়াবেটিস এবং মিষ্টি/চিনির সম্পর্ক নিয়ে আমি যা বিশ্বাস করি, ঠিক তা-ই এখানে বলা হয়েছে। একজন মানুষ যত বেশি মিষ্টি খাক, যদি পর্যাপ্ত কায়িক শ্রম করে, ডায়াবেটিস থেকে পুরোপুরি নিরাপদ থাকবে। পক্ষান্তরে কায়িক শ্রম থেকে দূরে থেকে কোনো লোক যদি ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার জন্য মিষ্টি/চিনি সম্পূর্ণ বর্জন করে, সে কখনো ডায়াবেটিস থেকে রেহাই পাবে না। কারণ ডায়াবেটিসের প্রধান কারণ কায়িক শ্রম থেকে দূরে থাকা।

এবার দৈনিক কালের কণ্ঠে ১০ জুন ২০১৮ তারিখে ‘মিষ্টি খেলেই কি ডায়াবেটিস হয়?’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন দেখুন। সেখানে বলা হয়, ‘মিষ্টি খেলে প্রেম বাড়ে। ডায়াবেটিস বাড়ে না। অবাক হচ্ছেন! সুগার হতে পারে এই ভয়ে ছোট থেকেই বাড়িতে অভ্যাস করানো হয় চিনি ছাড়া লাল চা। শেখানো হয় রসগোল্লার দিকে তাকানো পাপ। কেক, আইসক্রিম সবই বিষ। চারটি শশা আর টকদই খেয়ে বেঁচে থাকা। তাও ডায়াবেটিসকে ঠেকানো গেল না। জীবনের চাপ আর অফিসের যাঁতাকলে গুটি গুটি পায়ে সে ঢুকেই পড়ল। তাহলে উপায় কি? অতএব, আবার নতুন করে মিষ্টির প্রেমে পড়ুন। মিষ্টি খেলে যেমন কৃমি হয় না, তেমনই সুগারও বাড়ে না।’

এখানে মিষ্টি খাওয়ার সাথে সুগার বাড়া এবং কৃমি হওয়া উভয়টার সম্পর্ক নাকচ করে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার ভয়ে মিষ্টি খাওয়া ছেড়ে দিলেও ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে না।

এবার বিবিসি বাংলায় ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে প্রকাশিত ‘মিষ্টি কি আসলেই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর?’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদনের কয়েকটি অংশ উল্লেখ করছি।

প্রতিবেদনটিতে প্রথমে বলা হয়, ‘চিনি, শর্করা, সুগার - যে নামেই ডাকুন, গত কয়েক দশকে বিজ্ঞানী আর ডাক্তারদের ক্রমাগত সতর্কবার্তার ফলে এটা হয়ে দাড়িয়েছে জনস্বাস্থ্যের এক নম্বর শত্রু। সরকার এর ওপর কর বসাচ্ছে। স্কুল আর হাসপাতালগুলো খাদ্যতালিকা থেকে একে বাদ দিয়ে দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন: আমাদের খাবার থেকে চিনি সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে দিতে। আমরা সবসময়ই শুনছি, যারা বেশি মিষ্টি খায় তাদের টাইপ-টু ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি।
কিন্তু এর বিপরীতেও একটা কথা আছে। আসলে এসব স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য শর্করাই যে দায়ী - তা হয়তো না-ও হতে পারে।...’
‘তা ছাড়া, বিজ্ঞানীরা আরো বলছেন, যে কোন একটি খাবারকে সমস্যার মূল কারণ বলে চিহ্নিত করারও অনেক বিপদ আছে - কারণ এর ফলে এমন হতে পারে মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয় কোন খাবার হয়তো আপনি খাওয়া বন্ধ করে দিলেন।...’

‘বিজ্ঞানীরা বলছেন, উচ্চ মাত্রার ফ্রুকটোজ সমৃদ্ধ কর্ন সিরাপ বা বাড়তি চিনিওয়ালা পানীয়, জুস ড্রিংক, মধূ, বা সাদা চিনি এগুলো হৃদযন্ত্রের সমস্যা তৈরি করতে পারে, কারণ তা ধমনীর ভেতর ট্রাইগ্লিসারাইডজাতীয় চর্বি জমাতে ভুমিকা রাখে। বিভিন্ন জরিপে এই বাড়তি যোগ করা চিনিসমৃদ্ধ খাবার বা পানীয়ের সাথে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার সম্পর্ক দেখা গেছে। কিন্তু সুগারের কারণেই যে হৃদরোগ বা ডায়াবেটিস হয় - এটা স্পষ্ট করে বলার উপায় এখনো নেই। লুজান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লুক টাপি বলছেন, অতিরিক্ত ক্যালরিই ডায়াবেটিস, স্থূলতা এবং উচ্চ রক্তচাপের কারণ এবং সুগার সেই উচ্চ ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবারের একটা অংশ মাত্র।
এমন দেখা গেছে, যারা এ্যাথলেট বা ক্রীড়াবিদ - তারা বেশি শর্করা খেলেও শারীরিক পরিশ্রম বেশি করছেন বলে তা হজম হয়ে যাচ্ছে - কোন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে না।...’

‘খাদ্য বিশেষজ্ঞ রেনি ম্যাকগ্রেগর বলছেন, আমাদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই সুষম খাবারের সংজ্ঞা ভিন্ন ভিন্ন। আসলে খাদ্যতালিকা থেকে চিনিকে বাদ দিয়ে দেয়াটা বরং হিতে বিপরীত হতে পারে। এমন হতে পারে চিনি বাদ দিয়ে আপনি হয়তো অতিরিক্ত ক্যালরিসমৃদ্ধ কোন খাদ্য বেশি খেতে শুরু করলেন, তাতে ক্ষতিই বেশি।’ [https://www.bbc.com/bengali/news-45678886]

এই প্রতিবেদন এই সত্যটি সবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, যারা পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম করে (যেমন: এ্যাথলেট), তারা বেশি শর্করা খেলেও কোনো ক্ষতি হয় না তথা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ইত্যাদিতে আক্রান্ত হয় না। কারণ? কারণ এসব রোগের জন্য চিনি/মিষ্টি খাওয়া দায়ী নয়, দায়ী হচ্ছে শারীরিক পরিশ্রম থেকে দূরে থাকা।

চিনি কিংবা মিষ্টি খাওয়ার সাথে উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্ট অ্যাটাকের সম্পর্ক

এবার চিনির সাথে উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাকের সম্পর্কের কথায় আসি। এ লেখায় বিভিন্নভাবে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয়েছে, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাক বা হার্ট ব্লকেজ এসব রোগ সৃষ্টির জন্য মুটিয়ে যাওয়া, বেশি বেশি খাওয়া, আরামে আরামে থাকা, শরীরে মেদ-চর্বি-কোলেস্টেরল বেশি হওয়া এবং সর্বোপরি কায়িক শ্রম পর্যাপ্ত পরিমাণে না করা দায়ী। আমাদের চেনাজানা যে মানুষগুলো এসব রোগে আক্রান্ত বা এসব রোগে মারা গেছেন, শুধু তাদের দিকে লক্ষ্য করলে এ কথার সত্যতা উপলব্ধি করা যাবে। ব্যতিক্রম তো থাকবেই, সেগুলোর অন্তর্নিহিত সত্য পর্যন্ত আমরা পৌঁছার সুযোগ পাই না বলে সেগুলোকে হয়তো ব্যতিক্রম মনে হয়।

অতএব যেসব লোকের মধ্যে এসব রোগের জন্য দায়ী কোনো বৈশিষ্ট্য নেই তথা যেসব লোক চিকন শরীরের, পরিমিত খায়, কষ্টসহিষ্ণু জীবন যাপন করে, শরীরে মেদ-চর্বি-কোলেস্টেরল বাড়তে দেয় না, তারা যতো চিনি, চিনির তৈরি খাবার খাক, তাদের এসব কোনো রোগ হবে না, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমাদের আশপাশে এরকম অসংখ্য উদাহরণ আমরা একটু খুঁজলেই পেয়ে যাবো। অন্ততঃ যারা পায়েচালিত রিকশা চালায় দীর্ঘদিন ধরে, তাদের কারো শরীরে দেখবেন এরকম কোনো রোগ নেই।
আমি জানি না, হাতের কাছেই উভয় প্রকারের অসংখ্য উদাহরণ থাকতে আমরা কেন এ ব্যাপারে বিভ্রান্ত হই? কেন আমরা অকারণে উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাকের জন্য চিনিকে দায়ী করি?

৮ অক্টোবর ২০১৭ সংখ্যা দৈনিক যুগান্তরের উপসম্পাদকীয় পাতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের অধ্যাপক ড. মুনীর উদ্দিন আহমদের এ সংক্রান্ত একটি লেখা ছাপা হয় ‘চিনির দোষ কোলেস্টেরলের ঘাড়ে!’ শিরোনামে। শিরোনাম দেখেই আশা করি অনেকে লেখাটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা পেয়ে গেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘হৃদরোগ, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস, কিডনি ফেইলিয়রসহ অসংখ্য রোগের উৎপত্তির কারণ চিনি।’ বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, তিনি শুধু এসব রোগের জন্য নয়, মোটা হওয়ার জন্যও চিনিকে দায়ী করে বসেছেন! তিনি লিখেছেন, ‘বর্তমানে বিশ্বের ৪০ শতাংশ মানুষ স্থূল এবং এর মূল কারণ চিনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘চিনি ও পরিশোধিত চিনির খাবার খেয়ে বিশ্বে লাখ লাখ মানুষ হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকে মারা যাচ্ছে।’

মানুষ স্থূল হয় কেন, শুধু এ ব্যাপারে তাঁর মন্তব্যই তাঁর চিন্তাধারার অগভীরতার পরিচয় দেয়। এটা সবাই জানে, মানুষ বেশি বেশি খেলে আর আরামে আরামে বা পরিশ্রমশূন্য থাকলেই মুটিয়ে যায়। এগুলো মোটা হওয়ার সাধারণ কারণ। ৫ নভেম্বর ২০১৭ সংখ্যার প্রথম আলোয় ‘কেউ বেশি খেয়ে মোটা হচ্ছে কেউ না পেয়ে অপুষ্টিতে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি মূলতঃ ‘গ্লোবাল নিউট্রিশন রিপোর্ট’ এর একটি গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে তৈরি করা হয়েছে, যা বার্তা সংস্থা রয়টার্সে প্রকাশিত হয়েছে ৪ নভেম্বর। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ‘অতিরিক্ত ভোজনে সারা বিশ্বেই সব বয়সী মানুষের মধ্যে স্থূলতার সমস্যা প্রবল। বিশ্বের ৭০০ কোটি মানুষের মধ্যে ২০০ কোটিই বাড়তি ওজন বা স্থূলতা সমস্যার শিকার। গবেষণায় দেখা গেছে, উত্তর আমেরিকার সব নারী ও পুরুষের এক-তৃতীয়াংশ স্থূ’লকায়। আর বিশ্বে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের অন্তত ৪ কোটি ১০ লাখ এ সমস্যায় আক্রান্ত। শুধু আফ্রিকায় প্রায় ১ কোটি শিশু স্থূলকায় হিসেবে বিবেচিত।’

প্রতিবেদনটিতে স্থূলতার জন্য সরাসরি অতিরিক্ত ভোজনকে দায়ী করা হয়েছে। অতি ভোজন মোটা হবার একটা মুখ্য কারণ। মোটা হবার কিছু গৌণ কারণও রয়েছে। হরমোনের কারণে, কোনো ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে, আবার বাবা-মা দু’জনের কেউ মোটা হওয়ার কারণে বংশগতভাবেও অনেকে মোটা হয়। তবে সংখ্যায় এগুলো কম।

আমি নিজে মোটা হবার প্রতি একসময় অনেক উৎসাহী ছিলাম। মিষ্টি বা চিনির তৈরি খাবারও আমার প্রিয় বলে বেশি বেশি খাওয়া হয়। তবু মোটা হতে তো পারিনি আজও! আমার বাবাকেও দেখতাম, মিষ্টান্ন বা চিনির তৈরি খাবার খেতে বেশ পছন্দ করতেন। কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ বা ডায়াবেটিস এসব কোনো রোগ তাঁকে আক্রমণ করেনি, যতোদিন তিনি পরিশ্রমের কাজে জড়িত ছিলেন। তাই অন্তত মোটা হবার জন্য চিনিকে দোষ দেয়াটা ভুল।

এবার লেখকের লেখাটি লেখার মূল উদ্দেশ্যে আসি। তিনি লিখেছেন, ‘সমসাময়িককালে যুক্তরাষ্ট্রের ‘জার্নাল অব অ্যামেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন ইন্টারনাল মেডিসিনে’ চিনিসংক্রান্ত এক অবিশ্বাস্য কেলেঙ্কারি উদঘাটিত হয়। ‘রিসার্চ প্রজেক্ট ২২৬’-এর আওতায় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন খ্যাতনামা গবেষককে হার্ট অ্যাটাকের কারণ হিসেবে চিনিকে বাদ দিয়ে শুধু চর্বি ও কোলেস্টেরলকে দায়ী করে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সুগার অ্যাসোসিয়েশন ৪৮ হাজার ৯০০ ডলার ঘুষ দিয়েছিল।
১৯৬৭ সালে ‘দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে’ প্রকাশিত হার্ভার্ডের গবেষণা প্রবন্ধে চিনিকে বাদ দিয়ে হার্ট অ্যাটাকের জন্য একতরফাভাবে চর্বি ও কোলেস্টেরলকে দায়ী করা হয়। সুগার অ্যাসোসিয়েশনের অর্থায়নে এ গবেষণা পরিচালিত হয়, যা বেমালুম চেপে যাওয়া হয়। চিনি অব্যাহতি পাওয়ার পর সুগার অ্যাসোসিয়েশন মওকা পেয়ে গেল এবং এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের চিনি, চিনিসমৃদ্ধ কোমল পানীয়, এনার্জি ড্রিঙ্ক, ক্যান্ডি, আইসক্রীম, মিষ্টি ও মিষ্টিজাতীয় খাবারের ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার স্বাধীনতা পেয়ে গেল।’

বেশ চাঞ্চল্যকর তথ্য বটে! তবে তথ্যটির সত্যাসত্য যাচাই করতে যাবার আগে আমি লেখকের লেখার আরেকটি অংশ উল্লেখ করতে চাই। লেখক অন্য জায়গায় লিখেছেন, ‘চিকিৎসা বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা যুগ যুগ ধরে বলে এসেছেন এবং এখনও অনেকেই বলছেন, কোলেস্টেরলের কারণে হার্ট অ্যাটাক হয়। এরই প্রেক্ষিতে চিকিৎসকরা অনন্তকাল থেকে রোগীদের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানো এবং চর্বিজাতীয় খাবার না খেতে পরামর্শ দিয়ে আসছেন।’

লেখকের দেয়া শেষ তথ্যমতেই যেহেতু ‘অনন্তকাল থেকে’ চিকিৎসক ও চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা হার্ট অ্যাটাকের জন্য চর্বি ও কোলেস্টেরলকে দায়ী মনে করে আসছেন, তাই হার্ভার্ডের গবেষকরা সুগার অ্যাসোসিয়েশনের অফার পেয়ে হয়তো ভাবলেন, সুগার অ্যাসোসিয়েশনের প্রস্তাবে আমরা তো কোনো মিথ্যাকে সত্য বলে চালিয়ে দিতে হবে না, সত্যকেই আরো সত্য বলে উপস্থাপন করতে হবে, অসুবিধা কোথায়, কিছু টাকাও বোনাস হিসেবে পাওয়া যাবে! সুতরাং গবেষকরা অন্যায় করেছেন কোথায়! সুগার অ্যাসোসিয়েশনও গবেষণার পেছনে ঘুষ দিয়ে বোকামী করেনি, মানুষের মন থেকে চিনির ব্যাপারে একটার মারাত্মক অপবাদ ঘোচানোর চেষ্টা করেছে মাত্র!

তাছাড়া গবেষকদের ঘুষ খাওয়া সংক্রান্ত কেলেঙ্কারীর সংবাদটি ভুয়াও তো হতে পারে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ডাক্তার মাহাথির মোহাম্মদ প্রথমবার যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন লন্ডনের টাইমস পত্রিকা তার বিরুদ্ধে একবার অভিযোগ করেছিল তাকে নাকি ৫০ হাজার পাউন্ড ঘুষ দিয়ে ওখানে ড্যাম তৈরির কন্ট্রাক্ট নিয়েছিল একটি প্রতিষ্ঠান। সাংবাদিকরা তাকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি হাসতে হাসতে উত্তর দেন, ‘দেখো, আমি এতো সস্তা নই যে, আমাকে মাত্র ৫০ হাজার পাউন্ডে কেউ কিনতে পারবে’। তার উত্তর শুনে সাংবাদিকরা হতবাক এবং টাইমস ঐ অভিযোগ আবার উত্থাপনের সাহস পায়নি। [আলাস্কা ও কানাডার রকি পর্বত থেকে ইন্দোনেশিয়া, পৃ-১১৫; লেখক : ডা. আবদুস সাত্তার; প্রকাশনায় : দি রিয়েল পাবলিশার্স]

মানুষের নামে প্রায়ই এমন অপবাদ উঠে। ফুটবল খেলোয়াড় মেসি, নেইমার, রোনাল্ডোর বিরুদ্ধেও মাঝে মাঝে রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ উঠে। অনেক অভিযোগ পরে আদালতে খারিজও হয়ে যায়। রাজস্ব ফাঁকি ছাড়া অন্য রকম অভিযোগেও মানুষ অভিযুক্ত হতে পারে। ২০১৮ সালের অক্টোবরের শুরুর দিকে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো একটি গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত হন। ‘বিপদ ধেয়ে আসছে রোনাল্ডোর দিকে’ শিরোনামে দৈনিক যুগান্তরের খেলার পাতায় ৯ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় মার্কা, ইউএস সকার সূত্রে। সেখানে বলা হয়, ‘বেশ বড় ঝামেলায় পড়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসের একটি হোটেলে পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড তাকে ধর্ষণ করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন সাবেক মার্কিন মডেল ক্যাথরিন মায়োরগা।...’ প্রতিবেদনটির শেষে দুঃসময়ে রোনাল্ডোর পাশে দাড়ানো পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনিও কস্তার একটি বক্তব্য উল্লেখ করা হয়। তিনি বলেন, ‘একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠা ও দোষী প্রমাণিত হওয়া এক কথা নয়।’

৫০ বছর আগে গবেষণাটি যারা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগও যে ভুয়া হতে পারে না, তার কোনো নিশ্চয়তা আছে? তাছাড়া ৫০ বছর আগের একটি গবেষণায় ঘুষ গ্রহণের তথ্য এতোদিন কিভাবে চাপা থাকে! ৫০ বছর আগের একটি গবেষণায় ঘুষ গ্রহণের কথা ৫০ বছর পরে এসে আবিষ্কৃত হবার মধ্যে কোনো রহস্য থাকতেই পারে।
হৃদরোগের জন্য যে শারীরিক পরিশ্রমহীনতা ও স্থূলতা দায়ী এবং দীর্ঘজীবি হবার জন্য শারীরিক পরিশ্রম বড় ধরনের ভূমিকা রাখে, এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় ১৪ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে ÔScientists recomend 20-minute daily walk to avoid premeture death শিরোনামে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটির কিছু অংশ এখানে উল্লেখ করা হলো।

‘Scientists looked at the effects of obesity and exercise on 334,161 European men and women whose progress was followed for 12 years. They found that people who engaged in moderate levels of daily exercise – equivalent to taking an energetic 20-minute walk – were 16% to 30% less likely to die than those classified as inactive.
Although the impact of exercise was greatest among people of a normal weight, even those with a high body mass index (BMI) levels saw a benefit. ...

Lack of exercise was thought to have caused almost 700,000 deaths across Europe in 2008. ...
Study leader Prof Ulf Ekelund, from the Medical Research Council (MRC) epidemiology unit at Cambridge University, said: ‘‘This is a simple message: just a small amount of physical activity each day could have substantial health benefits for people who are physically inactive.’’

‘‘Although we found that just 20 minutes would make a difference, we should really be looking to do more than this – physical activity has many proven health benefits and should be an important part of our daily life.’’ ...
The findings, which are published in the American Journal of Clinical Nutrition, say the greatest reductions in the risk of premature death were seen when comparing moderately active groups with those who were cpmpletely inactive.
Using the most recent available public data, the researchers calculated that 337,000 of the 9.2m deaths that occured in Europe in 2008 could be attributed to obesity, but physical inactivity was thought to be responsible for almost double this number – 676,000 deaths. ...
June Davison, senior cardiac nurse at the British Heart Foundation, said: ‘‘The results of this study are a clear reminder that being regularly physically active can reduce the risk of dying from coronary heart disease.Õ [https://www.theguardian.com/lifeandstyle/2015/jan/14/scientists-recommend-20-minute-daily-walk-premature-death]

এ গবেষণা প্রতিবেদন যা নির্দেশ করে, সংক্ষেপে তা হলো: শারীরিক কার্যকলাপ যতো বেশি করা যাবে, ক্রনিক হৃদরোগ এবং অকালমৃত্যুর ঝুঁকি ততো কমবে। এখানে চিনি বা মিষ্টি খাওয়া বা না খাওয়ার কোনো প্রশ্ন নেই।

Occupation: Teaching, Hobbies: Writing

0 Comments: