নিপাহ ভাইরাস কি সত্যিই কোনো ভাইরাস?
নিপাহ ভাইরাস থেকে কিভাবে সাবধান থাকবেন : আমরা কিছু কথা
নিপাহ সংক্রমণমৃত আটজনই খেজুরের কাঁচা রস খেয়েছিলেনবাদুড় থেকে খেজুরের রস, সেই রস থেকে মানুষে সংক্রমণ ঘটে। এতে মৃত্যুর হার ৭০ শতাংশ।প্রথম আলো, প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩``নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। শেষ মারা গেছেন ২০ বছর বয়সী নরসিংদীর এক যুবক। এ নিয়ে এ বছর নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আটজনের মৃত্যু হলো। এরা প্রত্যেকে খেজুরের কাঁচা রস খেয়েছিলেন। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এই তথ্য জানিয়েছে।আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ বছর নিপাহয় আক্রান্ত সন্দেহভাজন মোট ১৬১ জনের নমুনা আমরা পরীক্ষা করেছি। এদের মধ্যে ১১ জনের নিপাহ শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে মারা গেছেন আটজন। সবশেষ গত সপ্তাহে মারা গেছেন নরসিংদীর এক ব্যক্তি।’এ বছর যে ১১ জনের নিপাহ শনাক্ত হয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকের সংক্রমণের ইতিহাস সংগ্রহ করেছেন আইইডিসিআরের বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আক্রান্ত ও মৃত প্রত্যেকে এই মৌসুমে খেজুরের কাঁচা রস খেয়েছিলেন।■ দেশে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৩৩৩ জন।■ সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন ফরিদপুর জেলায়, ৭১ জন।■ এ পর্যন্ত সংক্রমণ ধরা পড়েছে ৩৪ জেলায়।এদিকে নিপাহ শনাক্ত হওয়া আরও একটি জেলার সংখ্যা বাড়ল। ২০০১ সালে দেশে প্রথম নিপাহ শনাক্ত হয় মেহেরপুর জেলায়। এর পর থেকে প্রায় প্রতিবছরই কোনো না কোনো জেলায় নিপাহ–আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত করেছে আইইডিসিআর। এর মধ্যে ২০০২, ২০০৬ ও ২০১৬ সালে কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। এ সময়ে মোট ৩৩ জেলায় নিপাহ শনাক্ত হয়েছিল। জেলার তালিকায় নরসিংদী ছিল না। এবার নরসিংদী নিয়ে জেলার সংখ্যা হলো ৩৪। এ বছর সাত জেলায় এই রোগ শনাক্ত হয়েছে। নরসিংদী ছাড়া অন্য জেলাগুলো হচ্ছে শরিয়তপুর, রাজবাড়ী, ঈশ্বরদী, নাটোর, নওগাঁ ও রাজশাহী।নরসিংদীর ওই যুবক প্রথমে অসুস্থ হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তারপর তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আইইডিসিআর তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে ১২ ফেব্রুয়ারি। এর পরদিনই তিনি মারা যান।আইইডিসিআরের তথ্য বলছে, এ পর্যন্ত নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে ৩৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ফরিদপুর জেলায়। বিভিন্ন বছরে এই জেলায় মোট ৭১ জন মারা গেছেন।নিপাহ ভাইরাস থাকে বাদুড়ের শরীরে। কিন্তু বাদুড়ের কোনো ক্ষতি হয় না। বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখেছেন, বাদুড়ের লালা ও প্রস্রাব খেজুরের রসে মেশে। সেই রস কাঁচা অবস্থায় খেলে নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। সংক্রমিত মানুষ থেকেও সংক্রমণ ঘটে। বাদুড়ে খাওয়া ফল থেকেও নিপাহ সংক্রমণের ঝুঁকি আছে। তবে এ পর্যন্ত ফল থেকে সংক্রমণের কোনো নজির গবেষকদের চোখে ধরা পড়েনি। গবেষকেরা বলছেন, নিপাহ ভাইরাসে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। ১০০ জন আক্রান্ত হলে মৃত্যুর ঝুঁকি ৭০ জনের।আইইডিসিআরের পরিচালক তাহমিনা শিরীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘মৃত্যুহার অনেক বেশি হওয়ায় আমরা মানুষকে খেজুরের কাঁচা রস খাওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। অনুরোধ করছি, ব্যক্তিগতভাবে বা পারিবারিকভাবে কেউ যেন খেজুরের কাঁচা রস না খান। কোনো অনুষ্ঠানে যেন তা খাওয়া না হয়। খেজুরের রস নিয়ে যেন কোনো অনুষ্ঠান করা না হয়। তবে রস জ্বাল দিয়ে খেলে বা গুড় খেলে কোনো ক্ষতি নেই।’' [https://www.prothomalo.com/bangladesh/fjfgbeebxn ]
প্রতিবেদনটি থেকে ৪টি তথ্য হাইলাইট করা যেতে পারে।(১) ‘‘এ বছর নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আটজনের মৃত্যু হলো। এরা প্রত্যেকে খেজুরের কাঁচা রস খেয়েছিলেন।’’(২) ‘‘এ বছর যে ১১ জনের নিপাহ শনাক্ত হয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকের সংক্রমণের ইতিহাস সংগ্রহ করেছেন আইইডিসিআরের বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আক্রান্ত ও মৃত প্রত্যেকে এই মৌসুমে খেজুরের কাঁচা রস খেয়েছিলেন।’’(৩) ‘‘বাদুড়ে খাওয়া ফল থেকেও নিপাহ সংক্রমণের ঝুঁকি আছে। তবে এ পর্যন্ত ফল থেকে সংক্রমণের কোনো নজির গবেষকদের চোখে ধরা পড়েনি।’’(৪) ‘‘নিপাহ ভাইরাস থাকে বাদুড়ের শরীরে। কিন্তু বাদুড়ের কোনো ক্ষতি হয় না। বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখেছেন, বাদুড়ের লালা ও প্রস্রাব খেজুরের রসে মেশে। সেই রস কাঁচা অবস্থায় খেলে নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। সংক্রমিত মানুষ থেকেও সংক্রমণ ঘটে।’’শেষ বক্তব্য নিয়ে কথা বলার আগে আমরা হাইলাইট করা প্রথম তিনটি তথ্য নিয়ে আলোচনা করি।প্রথম দু’টি তথ্য থেকে আমরা নিশ্চিত হই, নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃত সবাই খেজুরের রস খেয়েছিল। খেজুরের রস খায়নি, এমন কেউ এই ভাইরাসে মৃত্যুবরণ দূরের কথা, আক্রান্তও হয়নি।তৃতীয় বক্তব্য থেকে বাদুড়ে খাওয়া ফল থেকে নিপাহ সংক্রমণের ঝুঁকির কথা বলা হলেও এ পর্যন্ত ফল থেকে সংক্রমণের কোনো নজির গবেষকদের চোখে ধরা পড়েনি বলে আমরা নিশ্চিত হই।হাইলাইট করা শেষ বক্তব্যে বলা হয়, নিপাহ ভাইরাস থাকে বাদুড়ের শরীরে। কিন্তু বাদুড়ের কোনো ক্ষতি হয় না। বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখেছেন, বাদুড়ের লালা ও প্রস্রাব খেজুরের রসে মেশে। সেই রস কাঁচা অবস্থায় খেলে নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। সংক্রমিত মানুষ থেকেও সংক্রমণ ঘটে।এই বক্তব্যে নিপাহকে বাদুড় থেকে সৃষ্ট এবং সংক্রামক রোগ বলে মন্তব্য করা হলেও প্রথম তিনটি বক্তব্য থেকে এর সত্যতা পাওয়া যায়নি মোটেও।তাই নিপাহ ভাইরাসকে ভাইরাস নাম দেয়া হলেও, একে সংক্রামক রোগ বলা হলেও ভাইরাস হিসেবে বা সংক্রামক রোগ হিসেবে প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি।তাই আমরা ধরে নিতে পারি, খেজুরের কাঁচা রস খেলেই মানুষ এই সমস্যার শিকার হয় এবং অনেকে মৃত্যুবরণ করে। নিপাহ ভাইরাস নামক এই রোগ থেকে বাঁচতে হলে কাঁচা খেজুরের রস খাওয়া যাবে না কোনোভাবে। আমি মনে করি আপাতত এটাই সাবধানতা।
এই বিষয়ে আরো কিছু প্রতিবেদন পড়া যাক:
‘‘নিপাহ ভাইরাসে মৃত্যু একজনের, খেজুরের রস পানে সতর্ক থাকুন’’ শিরোনামে প্রথম আলোয় ১১ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘প্রাণঘাতী নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হওয়ার আগে এই ব্যক্তি খেজুরের কাঁচা রস খেয়েছিলেন। খেজুরের রস থেকে এ সংক্রমণ হয়েছিল।
শীতকালের সাধারণ রোগবালাই ও নিপাহর সংক্রমণ নিয়ে আজ বুধবার এক সেমিনার আয়োজন করে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। সেখানেই নিপাহ ভাইরাসে মৃত্যুর এ তথ্য জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাদেশে ২০০১ সালে প্রথম নিপাহ শনাক্ত হয় মেহেরপুরে। এরপর প্রায় প্রতিবছর কোনো না কোনো জেলায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। এ পর্যন্ত আক্রান্ত ৩২৬ জনকে শনাক্ত করা গেছে। তাঁদের মধ্যে মারা গেছেন ২৩১ জন।
আইইডিসিআরের বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা বলেন, গত সপ্তাহে রাজশাহীর একজন নারী নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ৩৫ বছর বয়সী ওই নারী আক্রান্ত হওয়ার আগে খেজুরের রস খেয়েছিলেন। বাদুড় নিপাহ ভাইরাসের বাহক। খেজুরের রসে এ ভাইরাস এসেছিল বাদুড় থেকে।
সেমিনারে বলা হয়, বাংলাদেশে ২০০১ সালে প্রথম নিপাহ শনাক্ত হয় মেহেরপুরে। এরপর প্রায় প্রতিবছর কোনো না কোনো জেলায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। এ পর্যন্ত আক্রান্ত ৩২৬ জনকে শনাক্ত করা গেছে। তাঁদের মধ্যে মারা গেছেন ২৩১ জন।
গত সপ্তাহে রাজশাহীর একজন নারী নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ৩৫ বছর বয়সী ওই নারী আক্রান্ত হওয়ার আগে খেজুরের রস খেয়েছিলেন। বাদুড় নিপাহ ভাইরাসের বাহক। খেজুরের রসে এ ভাইরাস এসেছিল বাদুড় থেকে।
অনুষ্ঠানে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন বলেন, নিপাহ আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুহার অনেক বেশি। জানা গেছে যে বাদুড় এই ভাইরাস ছড়ায়। বাদুড় থেকে খেজুরের রসে ও রস থেকে মানুষের শরীরে এ ভাইরাস এসেছে। তাই খেজুরের কাঁচা রস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এ ব্যাপারে জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি।’’
[https://www.prothomalo.com/bangladesh/q6bte67ywq]
এই প্রতিবেদনেও বলা হয়, ‘‘রাজশাহীর একজন নারী নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ৩৫ বছর বয়সী ওই নারী আক্রান্ত হওয়ার আগে খেজুরের রস খেয়েছিলেন।’’
খেজুরের কাঁটা রস খেয়েই তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।
https://www.dailynayadiganta.com/health/389851/
https://www.ittefaq.com.bd/627803
0 Comments: