স্ট্রোক এবং ক্যান্সারের কোনো কারণ এখনো পরিষ্কার নয়
ব্রেইন স্ট্রোক এবং ক্যান্সারের কোনো কারণ এখনো পরিষ্কার নয়
হৃদরোগ (হার্ট অ্যাটাক) হয় যেসব কারণে, যেমন মুটিয়ে যাওয়া, শারীরিক পরিশ্রমশূন্য থাকা, শরীরে চর্বি—কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া এসবকে অনেকে সমানভাবে স্ট্রোকের জন্যও দায়ী মনে করেন। মোটা হওয়া বা বাড়তি চর্বিজনিত কারণে স্ট্রোক হবার কথা অনেক ডাক্তারের লেখায়ও সচরাচর পত্রিকায় দেখা যায়। ১ নভেম্বর ২০১৭ দৈনিক নয়াদিগন্তের ‘নিরাময়’ পাতায় একটি লেখা ছাপা হয় ‘স্ট্রোক পক্ষাঘাত : চিকিৎসা ও প্রতিরোধ’ শিরোনামে। লেখক: ডা. এম এ হানিফ। লেখাটিতে স্ট্রোকের ‘পরিবর্তনীয় বিপজ্জনক কারণ’ হিসেবে ৭টি কারণ উল্লেখ করা হয়। যথা: ১. উচ্চ রক্তচাপ; ২. হৃদরোগ; ৩. অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রোগ; ৪. রক্তে চর্বির অতিরিক্ত মাত্রা; ৫. ধূমপান; ৬. অতিরিক্ত মদপান; ৭. জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি।
‘কেন হাঁটবেন?’ শিরোনামে আরেকটি লেখা ছাপা হয় ২১ অক্টোবর ২০১৫ তারিখের প্রথম আলোয়, যা লিখেছেন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ। তাতে তিনি লিখেন, ‘মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ বা স্টে্রাকের অন্যতম একটি রিস্ক ফ্যাক্টর হচ্ছে অলস জীবন যাপন করা, স্থূলতা বা অতিরিক্ত মোটা হওয়া।’
কিন্তু বাস্তবতার সাথে মিলিয়ে দেখলে বিষয়টা সঠিক বলে মনে হয় না। হৃদরোগ, ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ যেসব কারণে হয়, স্ট্রোক সেসব কারণে হয় না। চোখ বুলালেই সবাই তার পরিচিতজনদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ খুঁজে পাবেন, যারা স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিস এসবে ভুগছেন একই সাথে, কিন্তু স্ট্রোকে আক্রান্ত নন। আবার এমন অনেক মানুষও দেখা যায়, যাদের স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিস এসব কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। চর্বি বেশি বা উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত, এমন কোনো মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় না, এমন নয়। সেক্ষেত্রে বাড়তি চর্বিকে দায়ী করা যাবে না। কারণ, বাড়তি চর্বি নেই, এমন মানুষও অহরহ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। মূলত স্ট্রোকের ‘সুনির্দিষ্ট এবং সাধারণ’ কোনো কারণ এখনও খুঁজে পাওয়া যায় না।
‘কেন হাঁটবেন কখন হাঁটবেন?’ শিরোনামে দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় মেডিসিন অনুষদের ডিন লেখক অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, ‘‘শরীর ঠিক রাখতে হলে ব্যায়ামের বিকল্প নেই। কিন্তু সব ব্যায়াম সব বয়সের জন্য উপযোগী নয়। কিন্তু হাঁটা এমন একটি ব্যায়াম যা সব বয়সের জন্যই চলে। এর উপকারিতাও অনেক। হাঁটা নিয়ে হয়েছে গবেষণা। গবেষণালব্ধ ফলাফল চমকপ্রদ। হাঁটার মতো ভালো ব্যায়াম আর নেই। তবে যারা নিয়মিত হাঁটাচলার মধ্যে থাকেন, তাদের আলাদা ব্যায়ামের দরকার হয় না। সমস্যা হয় যারা সারা দিন অনেকক্ষণ ধরে এক জায়গায় বসে কাজ করেন। তাদের কিন্তু কিছু সময় হলেও একটু একটু করে ব্যায়াম করা দরকার। শীতকালে এটা আরও বেশি জরুরি। এর ফলে শরীরে রক্ত চলাচল বাড়ে, আর ডায়াবেটিস, হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে পাঁচ দিন হাঁটলে আর শরীরের ওজন ৭ শতাংশ কমালে টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কমে প্রায় শতকরা ৫৮ ভাগ। আর যদি ডায়াবেটিস হয়েই থাকে তবে তা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও হাঁটা বিশেষ কার্যকর। শরীরের পেশিতে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ে হাঁটাহাঁটি করলে। ফলে রক্তের গ্লুকোজ কমে আর ডায়বেটিসের ওষুধ লাগে কম। নিয়মিত হাঁটলে শরীরে জমে থাকা মেদ কমে। পক্ষান্তরে ভালো কোলেস্টেরল বা এইচডিএল বাড়ে। আর কমে যায় মন্দ কোলেস্টেরল বা এলডিএল। ফলে রক্তনালিতে সহজে ব্লক হয় না, রক্তনালির দেয়াল শক্ত হয়ে যায় না। তাই উচ্চরক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। আর উচ্চরক্তচাপ আগে থেকেই থেকে থাকলে তাও থাকে নিয়ন্ত্রিত। নিয়মিত হাঁটলে রক্তনালির দেয়ালে চর্বি জমে কম। ফলে রক্তনালি সরু হয় না। তাই হৃদরোগের কারণে মৃত্যুঝুঁকি কমে প্রায় ৩৫ থেকে ৫০ শতাংশ। কমে যায় স্টে্রাকের ঝুঁকিও। এছাড়া ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমে শতকরা প্রায় ২৫ ভাগ। দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। কমে কোলন বা বৃহদন্ত্রের ক্যান্সারের সম্ভাবনা।’’
ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ হাঁটার উপকার সম্পর্কে প্রথমে উল্লেখ করেন, ‘‘এর (হাঁটা) ফলে শরীরে রক্ত চলাচল বাড়ে, আর ডায়াবেটিস, হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।’’ এখানে বিশেষ করে ২টি রোগের কথা তিনি বলেছেন। সেই ২টি রোগের মধ্যে স্ট্রোকের নাম নেই। মূলত হাঁটা একটি শারীরিক পরিশ্রম হওয়ায় নিয়মিত হাঁটার ফলে শরীরে চর্বি জমতে পারে না। আর চর্বি না জমলে মানুষ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং উচ্চ রক্তচাপ এই তিনটি রোগ থেকে পুরোপুরি নিরাপদ থাকে, এই কথাটি আমি বিভিন্ন লেখায় স্পষ্ট করার চেষ্টা করেছি।
তবে ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ আরো পরে গিয়ে বলেন, ‘‘নিয়মিত হাঁটলে রক্তনালির দেয়ালে চর্বি জমে কম। ফলে রক্তনালি সরু হয় না। তাই হৃদরোগের কারণে মৃত্যুঝুঁকি কমে প্রায় ৩৫ থেকে ৫০ শতাংশ। কমে যায় স্টে্রাকের ঝুঁকিও। এছাড়া ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমে শতকরা প্রায় ২৫ ভাগ। দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। কমে কোলন বা বৃহদন্ত্রের ক্যান্সারের সম্ভাবনা।’’
এখানে কায়িক শ্রমে স্ট্রোক বা কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমার কথা হয়তো সম্ভাবনা ভিত্তিতে অথবা সতর্কতার জন্য তিনি বলেছেন। নয়তো প্রথমেই বলতেন।
অনেকেই মনে করেন উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত মানুষের রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে তারা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু কিভাবে বা কেন মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়, তা অনেকেই জানেন না বলে এইরূপ ধারণা করে থাকেন।
‘স্ট্রোক: যেসব পদক্ষেপ রোগীর জীবন বাঁচাতে পারে’ শিরোনামে বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইটে ২৯ অক্টোবর ২০২১ তারিখে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে (তৈরি করেছেন সানজানা চৌধুরী) বলা হয়, ‘‘স্ট্রোকের সাথে অনেকে হার্ট অ্যাটাককে গুলিয়ে ফেলেন। কিন্তু দুটি বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা।
স্ট্রোক মূলত মানুষের মস্তিষ্কে আঘাত হানে। ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, মস্তিষ্কের কোন অংশে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে মস্তিষ্কের কোষগুলো মরে গেলে স্ট্রোক হয়।
সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য শরীরের প্রতিটি কোষে রক্ত সঞ্চালন প্রয়োজন। কারণ এই রক্তের মাধ্যমেই শরীরের কোষে কোষে অক্সিজেন পৌঁছায়।
কোন কারণে মস্তিষ্কের কোষে যদি রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়, রক্তনালী বন্ধ হয়ে যায় বা ছিঁড়ে যায় তখনই স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকির সৃষ্টি হয়।
সাধারণত ৬০—বছরের বেশি বয়সী রোগীদের স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি থাকলেও তবে ইদানীং তরুণ এমনকি শিশুরাও স্ট্রোকে আক্রান্ত আক্রান্ত হচ্ছেন।’’
[https://www.bbc.com/bengali/news-59087969]
মূলতঃ রক্তচাপ বেড়ে যাবার কারণে নয়, বরং মস্তিষ্কের কোন অংশে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে মস্তিষ্কের কোষগুলো মরে গেলেই স্ট্রোক হয়। এই জন্যই শুধু উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত মানুষ নয়, বরং যাদের প্রেসার লো (স্বাভাবিক রক্তচাপ), তারাও স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘‘কোন কারণে মস্তিষ্কের কোষে যদি রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়, রক্তনালী বন্ধ হয়ে যায় বা ছিঁড়ে যায় তখনই স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকির সৃষ্টি হয়।’’
এখানে বলা হয়েছে, ‘‘কোন কারণে’’। অর্থাৎ অজ্ঞাত কোনো কারণেই মস্তিষ্কে কখনো কখনো রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। যেই কারণে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়, সেই কারণটাই মূলতঃ স্ট্রোকের জন্য দায়ী। সেই কারণটি এখনো অজ্ঞাত। তাই স্ট্রোকের কারণ একনো অজ্ঞাত।
‘‘লো ব্লাড প্রেসার থেকে বাঁচার উপায়, জেনে নিন অবশ্যই’’ শিরোনামে ভারতের ডেইলী হান্ট ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বলা হয়, ‘‘রক্তচাপ উচ্চ হোক কিংবা নিম্ন— দুটোই সমস্যা। নিম্ন রক্তচাপ বা লো ব্লাড প্রেসারের সমস্যা এখন ঘরে ঘরে দেখা যাচ্ছে। লো ব্লাড প্রেসার তখনই হয়, যখন শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত ঠিকমতো পৌঁছাতে পারে না। দুশ্চিন্তা, ভয় ও স্নায়ুর দুর্বলতা থেকে এই সমস্যা দেখা দেয়।
রক্ত শরীরে ঠিকমতো সরবরাহ না হলে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, কিডনি ফেলিওরের মতো গুরুতর অসুস্থতা দেখা দিতে পারে।’’
[https://m.dailyhunt.in/news/india/bangla/tips24-epaper-dha22f8f326a4047098387a518bfae10b9/lo+blad+presar+theke+bonchar+upay+jenenin+abashyai-newsid-n310848498]
আমরা অকারণে টেনশন, উচ্চ রক্তচাপ এবং ধূমপানকে এই রোগটির জন্য দায়ী বলে মনে করছি। ‘যে কারণে ব্রেইন স্টে্রাক হয়’ শিরোনামে সময় নিউজের ওয়েবসাইটে ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বলা হয়, ‘‘অধিক পরিমাণে লবন খাওয়া, চর্বি খাওয়া এবং রক্তে অতিমাত্রায় কোলেস্টেরলের উপস্থিতি অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিকস ও উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি করে। আমাদের দেশে স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে শতকরা ৬০—৭০ ভাগ রোগী অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপের জটিলতা হিসেবে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে থাকে। যদিও স্ট্রোকের সঠিক কারণ নির্ণয় করা এখনো সম্ভব হয়নি।’’
এখানে বলা হয়েছে, ‘স্ট্রোকের সঠিক কারণ নির্ণয় করা এখনো সম্ভব হয়নি।’ আশা করি ব্রেইন স্ট্রোকের কারণ নিয়ে মন্তব্য করতে আমরা একটু ভেবেচিন্তে কথা বলবো। নয়তো মানুষ বিভ্রান্ত হবে। অকারণে টেনশনকে ভয় করবে, কোনো বিষয়ে টেনশনে পড়ে গেলে মানুষ সব সময় ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে পড়ার ভয়ে শঙ্কিত থাকবে। পাশাপাশি টেনশন বা ধূমপানকে এই—সেই রোগের কারণ বলে মন্তব্য করতেও আমরা তাড়াহুড়ো করবো না। এতে রোগগুলোর সত্যিকারের কারণ চুপিসারে আমাদের ক্ষতি করবে। তবে উচ্চ রক্তচাপের কারণে সত্যিই স্ট্রোক হয় কিনা, সেই বিষয়ে আরো গবেষণা প্রয়োজন।
ক্যান্সারের কারণ সম্পর্কে ভুল ধারণা আরো মারাত্মক। এটা খেলে ক্যান্সার হয়, ওটা খেলে ক্যান্সার হয়, এই রকম অনেক কিছু আমরা জানি। যেমন: মাঝে মাঝে কোনো ঔষধ নিষিদ্ধ করার সময় প্রচারিত হয়, ঔষধটি খেলে নাকি ক্যান্সার হয়। ব্রয়লার বা ফার্মের মুরগী খেলে ক্যান্সার হয়, তেলাপিয়া মাছ খেলে ক্যান্সার হয়,এরকম কথাও মাঝে মাঝে কানে আসে। ক্যান্সারের কারণ সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি কানে আসে দু’টি কথা: ১. শরীরে কোনো ইনফেকশন হলে তা নাকি ক্যান্সারে পরিণত হয় এবং ২. ধূমপানে ক্যান্সার হয়।
শরীরে কোনো ইনফেকশন হলে তা ক্যান্সারে পরিণত হয়, এই বিষয়টা যারা বিশ্বাস করেন, তারা লক্ষ করুন, আপনার পরিচিত পাঁচ জন লোকের কথা মনে করুন, যারা বিগত কয়েক বছরে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েছে। দেখুন ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার আগে তারা কেউ কি কোনো ইনফেকশনে ভুগেছেন কিনা? দেখবেন এই পাঁচজনের অধিকাংশই ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার আগে কোনো ইনফেকশনে ভোগেনি। এবার দেখুন আপনি এবং আপনার কাছের কেউ (আপনার বাবা, মা, দাদা, দাদি, ভাই, স্ত্রী, সন্তান) বিগত দশ বছরে কোনো ইনফেকশনে ভুগেছে কিনা? যদি ভুগে থাকে, তাহলে সেই ইনফেকশন থেকে কি ক্যান্সার হয়ে গেছে? হয়নি।
ইনফেকশন মানেই ক্যান্সার নয়। এই বিশ্বাসটা রাখুন। তাহলে কখনো কোনো ইনফেকশনের কবলে পড়লে ক্যান্সারের বিষয়ে আপনার মনে কোনো আশংকা সৃষ্টি হবে না। শত শত ইনফেকশন ভালো হয়ে যায়। অনেক মানুষ পায়ে মরিচাযুক্ত পেরাগ গেঁথে যাবার পর সেই স্থানে অনেক সময় ইনফেকশন হয়ে যায়। শেষে সুচিৎসায় তা থেকে পুরোপুরি সুস্থও হয়ে যায়। তাই ইনফেকশনের সাথে ক্যান্সারের সুসম্পর্ক নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া নিষ্প্রয়োজন।
‘তেলাপিয়া মাছ খেলে হবে যেসব বিপদ!’ শিরোনামে দৈনিক যুগান্তরে ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়, ‘তেলাপিয়া মাছ খেলে মরণব্যাধি ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে বলে দাবি করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্টে্রর কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) গবেষকরা।
এশিয়া থেকে যুক্তরাষ্টে্র আমদানি হওয়া তেলাপিয়া মাছগুলোর ওপর গবেষণা করেন মার্কিন যুক্তরাষ্টে্রর কৃষি বিভাগ। গবেষণায় তারা এসব তেলাপিয়া মাছের দেহে মানব দেহের জন্য ক্ষতিকারক বিষ খুঁজে পান।’
[https://www.jugantor.com/doctor-available/146438]
‘বাংলাদেশে ফার্মের মুরগির মাংসে ক্ষতিকর মাত্রায় ভারি ধাতুর উপস্থিতি, বললেন বিশেষজ্ঞরা’ শিরোনামে ভয়েস অব আমেরিকার (বাংলা) ওয়েবসাইটে ডিসেম্বর ০৬, ২০২১
তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ভাবে খামারে চাষ করা পোলট্রি মুরগির মাংস দেশে প্রোটিনের চাহিদা পূরণের একটি বড় উৎস হলেও তাতে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর অন্তত পাঁচটি ভারি ধাতুর উপস্থিতির কারণে ভোক্তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।
প্রবাবিলিটিস অব হেলথ রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট অব টক্সিক মেটালস ইন চিকেনস ফ্রম দ্য লারজেস্ট প্রডাকশন এরিয়া অব ঢাকা শীর্ষক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের কয়েকজন গবেষকের করা ওই গবেষণায় বলা হয়েছে খামারে চাষ করা এই মুরগির মাংসে পাঁচ ধরনের ভারী ধাতুর উচ্চমাত্রার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের কারিগরি সহায়তায় করা গবেষণার ফলাফলে খামারে চাষ করা মুরগির মাংসে আর্সেনিক, নিকেল, ক্রোমিয়াম, পারদ ও সিসার মতো ভারী ধাতু ক্ষতিকর মাত্রায় উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
এতে মানবদেহে সহনীয় মাত্রার চেয়ে ১০৪ গুণ আর্সেনিক, ৫.৫৮ গুণ নিকেল, ৩ গুণ ক্রোমিয়াম, ২.৮ গুণ পারদ ও ৪.৬ গুণ সিসা পাওয়া যায়। নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড পলিউশন রিসার্চ জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে যাতে বলা হয়েছে গবেষণা পরিচালনার জন্য ঢাকা জেলার সাভারের ১২টি বাণিজ্যিক খামার থেকে মুরগির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। গবেষণা পত্রে বলা হয় যে সকল খামার থেকে মুরগির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে সেগুলোতে ব্যবহার করা পোলট্রি ফিডের নমুনায়ও ক্ষতিকর মাত্রায় আর্সেনিক, নিকেল, পারদ ও সিসা পাওয়া গেছে। একইভাবে মুরগির পানীয় জলেও দূষণ পেয়েছে গবেষক দল। পানিতে অন্যান্য দূষণের পাশাপাশি মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকও পাওয়া যায়।
এ সকল ধাতুর মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি মানবদেহে ক্যান্সার ও অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করছে বলেও গবেষণায় উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয় এ সকল ক্ষতিকর ধাতু খাদ্যের মাধ্যমে গ্রহণ করলে মানবদেহে তাৎক্ষণিক কোনও সমস্যার সৃষ্টি না হলেও দীর্ঘদিন ধরে এগুলো শরীরে প্রবেশ করলে ২৫ শতাংশ ক্যান্সারের ঝুঁকি তৈরি হয়।’
[https://www.voabangla.com/a/bd-poultry-za/6340286.html]
তেলাপিয়া মাছ এবং ব্রয়লার মুরগি খেলে যদি সত্যিই ক্যান্সার হতো, তাহলে বাংলাদেশে ঘরে ঘরে ক্যান্সার রোগী পাওয়া যেতো, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে। কারণ গ্রামাঞ্চলে এই দু’টি খাবার সবচেয়ে বেশি খাওয়া হয়। বাংলাদেশের মানুষ প্রায় ৩০ বছরের মতো সময় ধরে এই দুটি খাবার খেয়ে আসছে। ক্যান্সারের সাথে এগুলোর সম্পর্ক থেকে থাকলে আরো আগেই তার প্রতিফলন দেখা যেতো। পৃথিবীতে প্রচারিত অনেক কথাই যে ভিত্তিহীন, যারা তেলাপিয়া মাছ এবং ব্রয়লার মুরগির সাথে ক্যান্সারের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছে, তারা তা প্রমাণ করার চেষ্টাই শুধু করেছে।
‘তেলাপিয়া ক্ষতিকর নয়, পুষ্টিকর ও নিরাপদ’ শিরোনামে বাংলাদেশের জনপ্রিয় টেলিভিশন এনটিভির ওয়েবসাইটে ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘তেলাপিয়া মাছ জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয় বরং পুষ্টিমানের দিক থেকে অত্যন্ত উপযোগী, সুস্বাদু ও নিরাপদ। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মৎস্যবিজ্ঞানী ড. এম জি হোসেন এই দাবি করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ কয়েকটি অনলাইনে তেলাপিয়া মাছ সম্পর্কে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিমূলক খবর প্রচারের প্রতিবাদে আজ শনিবার দুপুরে ময়মনসিংহের একটি হোটেলে বাংলাদেশ তেলাপিয়া ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এম জি হোসেন এই দাবি করেন।
মৎস্যবিজ্ঞানী ড. এম জি হোসেন বলেন, সুষম প্রোটিনসমৃদ্ধ তেলাপিয়া মাছে সব ধরনের অ্যামাইনো এসিড থাকায় মানুষের শরীর গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তেলাপিয়া মাছে সহনশীল মাত্রায় দুই ধরনের (ওমেগা—৬ ও ওমেগা—৩) ফ্যাটি এসিড রয়েছে। এ ছাড়া তেলাপিয়া মাছে যথেষ্ট পরিমাণ ভিটামিন এ, ই, ডি, বি১, বি১২, ফলিক এডিস, এসকরভিক এসিড রয়েছে যা সেলোনিয়াম ক্যানসার প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তেলাপিয়ার মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও পটাশিয়াম রয়েছে যা মানুষের শরীরের অস্থি গঠনে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ তথা হার্টকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে বলেও দাবি করেন তিনি।
বাংলাদেশ তেলাপিয়া ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও গিফট তেলাপিয়ার উদ্ভাবক এই বিজ্ঞানী আরো বলেন, যুক্তরাষ্টে্রর অত্যন্ত জনপ্রিয় মাছ গ্রোপার, স্লেপার ব্ল্যাক রূপচাঁদা, টোনা, পার্চ, মাহি ইত্যাদি মাছে সহনশীন মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ মার্কারি রয়েছে। অপরদিকে তেলাপিয়ার মধ্যে সহনশীল মাত্রার চেয়েও অনেক কম মাত্রায় মার্কারি রয়েছে বিধায় তেলাপিয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।
ড. এম জি হোসেন জানান, সি—ফুড ওয়াচ নামের একটি মার্কিন গ্রুপ বিশ্বব্যাপী তেলাপিয়া মাছ সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। ফলে ফেসবুকসহ কয়েকটি অনলাইন ‘তেলাপিয়া খেলে ক্যানসার হয়’ এমন অপপ্রচার শুরু করায় বাংলাদেশে তেলাপিয়া মাছের বেচাকেনায় ব্যাপক ধস নেমেছে।
বাংলাদেশ তেলাপিয়া ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক এ বি এম শামসুল আলম বাদল জানান, জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে তেলাপিয়া মাছ পরীক্ষা করানো হয়েছে। কিন্তু কোনো ধরনের ক্ষতিকারক উপাদান পাওয়া যায়নি। পরমাণু পরীক্ষাগারেও পরীক্ষা—নিরীক্ষায় কোনো ক্ষতিকর উপাদান নেই বলে গবেষকরা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও উপাচার্য ড. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এটা একটা ষড়যন্ত্র। যারা অপপ্রচার করছে, তারা কোথায় পেলেন যে তেলাপিয়া খেলে ক্যানসার হয়। প্রমাণ ছাড়া, পরীক্ষা—নিরীক্ষা ছাড়া এ ধরনের অপপ্রচার খুবই দুঃখজনক ও উদ্দেশ্যমূলক।’ [https://www.ntvbd.com/bangladesh/39517]
‘ব্রয়লার মুরগি নিয়ে কিছু গুজব ও তার সমাধান’ শিরোনামে ‘এগ্রিনিউজ ডটকম’ ওয়েবসাইটে এপ্রিল ৮, ২০২০ তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ব্রয়লার মুরগি খেলে ক্যানসার হয় —এমন একটি গুজব বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও সোস্যাল মিডিয়াতে দীর্ঘদিন ধরেই চাউর। আবার অনেকে সেটি বিশ্বাসও করছেন যার বিরূপ পড়ছে সেক্টরটিতে। গুজব রটনাকারিদের অভিযোগ, ব্রয়লার মুরগিকে ট্যানারি বর্জ্য মিশ্রিত ফিড খাওয়ানো হয় যেখানে ক্রোমিয়াম থাকে এবং সেই ক্রোমিয়াম ক্যান্সারের জন্য দায়ী। প্রকৃত পক্ষে বাংলাদেশে যে পরিমাণ ফিড উৎপাদন হয় এবং তার জন্য যে পরিমাণ প্রোটিণ সোর্স প্রয়োজন তার ১% পরিমাণও ট্যানারি বর্জ্য দিয়ে মেটানো সম্ভব না। হ্যা, একটা সময় খুব সামান্য কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কাজটি করতো এবং সেটি প্রায় ৮—১০ বছর আগে। কিন্তু বাংলাদেশ পোলট্রি শিল্প সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর শক্ত অবস্থানের কারণে প্রশাসন সেসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় এবং সেটি এখন বন্ধ রয়েছে। নিরাপদ পোল্টি্র খাদ্য সরবরাকৃত পোল্টি্রর মাংস অন্যান্য খাদ্যের মতই নিরাপদ।’ [https://www.agrinews24.com/2020/04/08/29585/]
ক্যান্সারের সাথে সবচেয়ে বেশি সম্পর্ক সৃষ্টি করা হয় ধূমপানের সাথে। এমনভাবে সম্পর্ক করা হয়, মনে হয় ধূমপান করলে ক্যান্সার থেকে রক্ষা পাবার কোনো সুযোগ নেই। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই মানুষ কমবেশ ধূমপান বা তামাক সেবন করে। অল্প কিছু দেশ আছে, যেখানে খুব কম মানুষ ধূমপান করে। বিশ্বের সব দেশে যদি শুধু ধূমপায়ী ও তামাক সেবনকারীরাই ক্যান্সারে আক্রান্ত হতো এবং অধূমপায়ী ও তামাক সেবনমুক্ত মানুষগুলো ক্যান্সারে আক্রান্ত না হতো, তাহলে নির্দ্বিধায় ধূমপান ও তামাক সেবনকে ক্যান্সারের জন্য একতরফাভাবে দায়ী করা যেতো। পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, ক্যান্সারে আক্রান্ত কোনো লোককে যখন দেখা যায়, সে ধূমপায়ী বা তামাকসেবী, তখন আর কিছু চিন্তা না করে ধূমপানকে দোষারোপ করাটা বিশ্বব্যাপী বেশ সাধারণ একটা প্রবণতায় পরিণত হয়েছে। হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। এসব রোগে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসকের কাছে গেলে চিকিৎসক যদি দেখেন, এরা ধূমপায়ী বা তামাকসেবী, তখন এদেরকে ধূমপান বা তামাক সেবন পুরোপুরি ছেড়ে দিতে বলেন। অথচ একই রোগে আক্রান্ত যারা ধূমপানে অভ্যস্ত নয়, তাদেরকে ধূমপান নয়, অন্য বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করেন। অর্থাৎ রোগ একই, কারণ একেক জনের ক্ষেত্রে একেকটা! যদি কেউ ধূমপান করে, তাহলে তার রোগাক্রান্ত হবার জন্য আর কিছু নয়, ধূমপানকেই দায়ী করা হয় চোখ বন্ধ করে, আর ধূমপান না করলে অন্যটা দায়ী!
ধূমপানে সত্যিই স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি হয় কিনা, এই বিষয়ে আরো দু’টি নিবন্ধ পড়তে পারেন:
(1) সংক্ষেপে: ধূমপানে কি সত্যিই স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়?
(2) বিস্তারিত: ধূমপান নয়, বরং মদপান ক্ষতিকর
এককথায় ধূমপান হচ্ছে একটা গিনিপিগ। বাংলাতে একটা কথা আছে, ‘যত দোষ, নন্দঘোষ।’ ধূমপান এবং তামাক সেবন একটা বৈশ্বিক গিনিপিগ বা নন্দঘোষ। যুগ যুগ ধরে ধূমপান এবং তামাক সেবনকে বিভিন্ন গুরুতর রোগের জন্য একতরফাভাবে দায়ী করে আসা হচ্ছে। যে জনগোষ্ঠীর মানুষ ধূমপান করে না, তারা যদি ক্যান্সারে আক্রান্ত না হতো, তাহলে ধূমপানকে ক্যান্সারের কারণ ভাবতে বেশ একটা চিন্তা করতে হতো না। ধূমপান ছাড়াও অন্য অনেক অজ্ঞাত কারণে অসংখ্য মানুষ বিশ্বব্যাপী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। ধূমপানে আসক্ত এলাহাবাদের যে অ্যাডভোকেট ভারতের আদালতে ধূমপান সংক্রান্ত একটি বিষয়ে আবেদন করেছিলেন, তিনি ধূমপানের কারণেই যে জিহ্বা ও মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তার কি কোনো নিশ্চয়তা আছে? টুথপেস্টের কারণেও অনেকের জিহ্বা ও মুখের ক্ষতি হতে পারে, কথাটা চিকিৎসা বিজ্ঞানই বলে। তাছাড়া ক্যান্সার শরীরের যে কোনো জায়গায় সৃষ্টি হতে পারে। ধূমপান না করলেও ক্যান্সার হয়তো তাকে ঠিকই আক্রমণ করতো।
নির্দিষ্ট করে ক্যান্সারের কোনো কারণ এখনও কেউ খুঁজে পায়নি। American Cancer SocietyÕর অনলাইনে What is Cancer? শিরোনামের আরেকটি নিবন্ধের Why did this happen to me? উপশিরোনামে বলা হয়েছে, People with cancer often ask, “What did I do wrong?” or “Why me?” Doctors don’t know for sure what causes cancer. When doctors can’t give a cause, people may come up with their own ideas about why it happened.
Some people think they’re being punished for something they did
or didn’t do in the past. Most people wonder if they did something to cause the
cancer.
If you’re having these feelings, you’re not alone. Thoughts and
beliefs like this are common for people with cancer. You need to know that
cancer is not a punishment for your past actions. Try to not blame yourself or
focus on looking for ways you might have prevented cancer. Cancer is not your
fault, and there’s almost never a way to find out what caused it. Instead,
focus on taking good care of yourself now.
[https://www.cancer.org/cancer/cancer-basics/what-is-cancer.html]
এখানে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, ‘Doctors don’t know for sure what causes cancer. When doctors can’t give a cause, people may come up with their own ideas about why it happened.’ অবাক লাগে, তবু মানুষ এটাসেটাকে ক্যান্সারের কারণ বলে প্রচার করে কিভাবে!
এই নিবন্ধ প্রথম যখন আমি পড়ি, তখন এই অংশটি এভাবেই ছিল। কিন্তু কিছুদিন আগ থেকে দেখছি নিবন্ধটি হালনাগাদ করা হয়েছে। এখন সেখানে এই বিষয়ে উল্লেখ আছে,
What causes cancer?
Cancer cells develop because of multiple changes in their genes. These changes can have many possible causes. Lifestyle habits, genes you get from your parents, and being exposed to cancer-causing agents in the environment can all play a role. Many times, there is no obvious cause.
এখানে স্পষ্ট করেই বলা হয়েছে, ‘‘অনেক সময়, কোন সুস্পষ্ট কারণ নেই।’’
চিকিৎসা বিজ্ঞান যখন এখনও ক্যান্সারের কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেনি এবং এ ব্যাপারে প্রায় সবাই একমত যে, ক্যান্সারের কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ এখনও খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন ধূমপান বা তামাক সেবনকে ক্যান্সারের জন্য দোষারোপ করা কি ঠিক? ‘বাংলা ট্রিবিউন’ একটি অনলাইন পত্রিকায় ০৯ মার্চ ২০১৬ তারিখে প্রকাশিত একটি সংবাদ দেখলাম, যার শিরোনাম: ‘ধূমপানে ক্যান্সার: প্রমাণ ছাড়া মানতে নারাজ ভারতের সবোর্চ্চ আদালত’। সংবাদটিতে বলা হয়, ‘ভারতের সুপ্রিম কোর্টের একটি প্রশ্ন দেশটির অনেক মানুষকে অবাক করেছে। মঙ্গলবার একটি সিগারেটের রঙ্গিন প্যাকেট নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে অনাকর্ষণীয় করার এক আবেদনের শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানীর সময় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জানতে চান, ধূমপানের কারণে যে ক্যান্সার হয়, এর পক্ষে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ রয়েছে কিনা। প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুর ও ইউ ইউ ললিত কাউন্সেল ঐশ্বওয়ারিয়া ভাটির কাছে জানতে চান, এটা কি সম্ভব যে, ধূমপানের কারণে ক্যান্সার হয়? ধূমপানে আসক্ত এলাহাবাদের এক অ্যাডভোকেট আদালতে এ আবেদন করেন। বর্তমানে তিনি জিহ্বা ও মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মুম্বাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চের বিচারপতিরা বলেন, এটা কিভাবে প্রমাণ করবেন? অনেক অধূমপায়ী আছেন যাদের ক্যান্সার হয়েছে। এছাড়া অনেক ধূমপায়ী আছেন যারা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সুস্থভাবে বেঁচেছিলেন।...’
[http://www.banglatribune.com/foreign/news/85161]
এবার বৃটেনে পরিচালিত ধূমপান—সম্পর্কিত একটি গবেষণার ফলাফল দেখা যাক। বৃটিশ মেডিকেল জার্নাল (বিএমজে) কর্তৃক পরিচালিত গবেষণাটির ফলাফল ‘One cigarette a day increases heart disease and stroke risk’ শিরোনামে ২৫ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখের BBC News —এ প্রকাশিত হয়। গবেষণা প্রতিবেদনটির চুম্বকাংশ এখানে উল্লেখ করা হল। ÔÔSmokers need to quit cigarettes rather than cut back on them to significantly lower their risk of heart disease and stroke, a large BMJ study suggests.
People who smoked even one cigarette a day were still about 50%
more likely to develop heart disease and 30% more likely to have a stroke than
people who had never smoked, researchers said.
They said it showed there was no safe level of smoking for such
diseases.
But an expert said people who cut down were more likely to stop.
Cardiovascular disease, not cancer, is the greatest mortality risk for smoking,
causing about 48% of smoking-related premature deaths.
While the percentage of adults in the UK who smoked had been
falling, the proportion of people who smoked one to five cigarettes a day had
been rising steadily, researchers said.
Their analysis of 141 studies, published in the BMJ, indicates a
20-a-day habit would cause seven heart attacks or strokes in a group of 100
middle-aged people. ...’’
বিবিসি নিউজে ২৫ জানুয়ারির ২০১৮ তারিখে প্রকাশিত প্রতিবেদনটির উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের দৈনিক ইত্তেফাক পরদিন ২৬ জানুয়ারি ‘ধূমপান কমিয়ে লাভ নেই, বৃটেনে নতুন গবেষণা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটি বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত হয় ‘ধূমপান কমিয়ে লাভ নেই — ব্রিটেনে নতুন গবেষণা’ শিরোনামে ২৬ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে।
ধূমপানে ক্যান্সারের ঝঁুকি যে কম, এ গবেষণা তা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ দু’ভাবেই দেখিয়ে দিয়েছে। প্রথমে সরাসরি বলেছে, ‘ধূমপানের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি ক্যান্সার নয়, বরং হৃদরোগ।’ পরে ১০০ জন ধূমপায়ীর ওপর গবেষণা করে বলেছে, ‘তাদের সাত জনই হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় (ক্যান্সারে নয়)।’
ধূমপানে যদি ক্যান্সার হতো, দিনে অন্তত ২০টি সিগারেট খান, এরকম ১০০ ধূমপায়ীর ওপর গবেষণায় তা অবশ্যই ধরা পড়তো। আসলে ধূমপানে ক্যান্সার হয় বলে যারা বিভিন্ন গবেষণার ফলাফলে উল্লেখ করেন, তাদের গবেষণা হয় উল্টো পথে। তারা কয়েকজন ক্যান্সার রোগীকে যখন দেখেন, এদের বেশিরভাগই ধূমপান করে, তখন আর কিছু না ভেবে মন্তব্য করেন, ধূমপানেই এদের ক্যান্সার হয়েছে। কিন্তু যারা ধূমপান করেন না, তাদের ক্ষেত্রে এসব গবেষক মনে করেন, বংশগত কারণে বা তেজস্ক্রিয়ার কারণে বা অজ্ঞাত কোনো কারণে তারা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। একটা রোগের জন্য ভালোভাবে না যাচাই করে একেক জনের ক্ষেত্রে একেকটা কারণকে দায়ী করাটা রোগটির সঠিক কারণ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।
বিএমজে’র গবেষণায় দৈনিক ২০টি সিগারেট খান, এমন ১০০ জন ধূমপায়ীর মধ্যে যে সাতজনকে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকে আক্রান্ত পাওয়া গেছে, সে সাতজন যে ধূমপানের কারণেই হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন, তা কি কোনোভাবে নিশ্চিত হওয়া যাবে? গবেষণাটির ধারেকাছে না থেকেও আমি প্রবল বিশ্বাসের সাথে বলতে পারি, এ সাতজনের যারা হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত, তাদের মধ্যে স্থ’ূলতা, পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রমহীনতা এবং শরীরে চর্বি—কোলেস্টেরলের আধিক্য— এ তিনটি বৈশিষ্ট্যের কোনো একটি বা একাধিকটি পাওয়া যাবে এবং এসব বৈশিষ্টের কারণেই আমি মনে করি, ধূমপানে এদের হার্ট অ্যাটাক হয়নি, হার্ট অ্যাটাক হয়েছে এসব কারণে। আর এ সাতজনের যারা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন, তারা কেন হয়েছেন, সে ব্যাপারে নিশ্চুপ থাকাটাই শ্রেয় ছিল। কারণ ধূমপান করে না, এমন লোকেরাও অহরহ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় সারা বিশ্বেই। তাই ধূমপানেই যে এরা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছে, তা নিশ্চিত করে বলতে গেলে ভুলের সম্ভাবনা থেকে যায়।
চায়নার ‘গুয়াংজৌ ক্যান্সার হসপিটালের’ ওয়েবসাইটে (বাংলা) ‘ফুসফুস ক্যান্সার’ শিরোনামে একটা লেখায় দেখলাম একটা চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সেখানে বলা হয়েছে, ‘গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ৯০% ক্ষেত্রেই ফুসফুস ক্যান্সার তাদের হয়, যারা ধূমপান করেন। তার মানে যারা ধূমপান করেন না তাদের কি এই ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা নেই? আসলে ব্যাপারটা এমন নয়। মডার্ন ক্যান্সার হসপিটাল গুয়াংজৌ দেখেছে যে, এখন পর্যন্ত ফুসফুস ক্যান্সারের প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। সুতরাং ধূমপান—ই না, এর সাথে আরও তিনটি কারণ জড়িত থাকতে পারে— ১. বায়ু দূষণ, ২. অতিরিক্ত প্রেসার, ৩. পুষ্টির অভাব। এছাড়াও ভাইরাল ইনফেকশন, মাইকোটক্সিন, টিউবারকুলসিস, ইমিউন ডিসফাঙ্কশন, এন্ডওক্রাইন ডিজঅর্ডার এবং জেনেটিক কারণেও ফুসফুস ক্যান্সার হতে পারে।’ [http://www.asiancancer.com/bengali/cancer-topics/lung-cancer]
এখানে স্পষ্ট করেই বলা হয়েছে, ‘মডার্ন ক্যান্সার হসপিটাল গুয়াংজৌ দেখেছে যে, এখন পর্যন্ত ফুসফুস ক্যান্সারের প্রকৃত কারণ জানা যায়নি’। সুতরাং কারো ফুসফুসে যদি ক্যান্সার বা অন্য কোনো সমস্যা হয়, তা ধূমপানের কারণে না হয়ে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হবার অন্য কারণগুলোর ফলেও হতে পারে।
কিছু লোক আছে, মনে করেন, ধূমপান হচ্ছে মদপানের সিঁড়ি। যারা ধূমপান করে, তারাই মদপানের দিকে ঝোঁকে বেশি। এরা এটা স্বীকার করতে আপত্তি করেন না যে, ধূমপান সম্পর্কে প্রচারিত ক্ষতিগুলোর বাস্তবতা তেমন না থাকলেও ধূমপান সবচেয়ে বড় যে ক্ষতিটি করে, তা হচ্ছে এটি মানুষকে মদপানের দিকে ধাবিত করে। এটা বরং প্রচারিত ক্ষতিগুলোর চেয়েও জঘণ্য। তাই ধূমপান কোনোভাবেই সমর্থিত নয়।
‘ধূমপান মানুষকে মদপানের দিকে ধাবিত করে বা ধূমপায়ীরাই মদপান করে বেশি’ বলে যারা মনে করে, তাদেরকে যখন প্রশ্ন করা হয়, ‘যেহেতু মাদক ক্ষতিকর, এ ব্যাপারে আপনার কোনো দ্বিমত নেই, তাই মাদককে যদি পৃথিবী থেকে পুরোপুরি দূর করে দেয়া যায়, তখন কি ধূমপান মানুষকে মদপানের দিকে ধাবিত করবে?’, তখন এরা এটা স্বীকার করতে বাধ্য হয়, পৃথিবী থেকে আগে মাদক দূর করা দরকার।
ধূমপান নিয়ে অনেক গবেষণায় দেখানো হয়, (১) আমেরিকায় বা অস্ট্রেলিয়ায় প্রতি চারজন ধূমপায়ীর মধ্যে একজন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। অথবা (২) প্রতি চারজন ক্যান্সারে আক্রান্ত মানুষের মধ্যে একজন ধূমপায়ী। এই রকম গবেষণা-ফলাফল থেকে আমরা প্রায় সবাই নিশ্চিত হই, ধূমপানে আর কোনো রোগ না হলেও নিশ্চিতভাবে ক্যান্সার হয়। আমাদের এই নিশ্চিত বিশ্বাসের কারণ বিশ্বব্যাপী ধূমপানকে নন্দঘোষ বানানো হয়েছে অনেক আগেই।
কিন্তু আমি মনে করি, এই রকম গবেষণা-ফলাফল নিশ্চিত করে, ধূমপানের সাথে ক্যান্সারের কোনো সম্পর্ক নেই। প্রথম ফলাফল অনুযায়ী যেই চারজন ধূমপায়ীর মধ্যে একজন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়, সেই একজন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে সেই কারণে, যেই কারণে অধূমপায়ী মানুষরা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। ধূমপায়ী মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারবে না কেন সেই কারণে, অধূমপায়ীরা যেই কারণে আক্রান্ত হয়? আমাদের চিন্তাধারায় এমন এক কেন্দ্রিকতা কেন? ধূমপানকে গিনিপিগ বানাতে আমাদের এতো আগ্রহ কেন? ধূমপায়ী মানুষ ধূমপান না করলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হতো না, কে বলেছে আপনাকে?
যদি অধূমপায়ী কেউ ক্যান্সারে আক্রান্ত না হতো, তাহলে বলার সুযোগ থাকতো সেই একজন ধূমপানেই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে। তাছাড়া যদি ধূমপানে মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হতো, তাহলে বাকি তিনজন কেন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়নি? বাকি তিনজন মানে শুধুই কিন্তু তিনজন নয়, বাকি তিনজন মানে তিন লক্ষও হতে পারে। কারণ চারজনে তিনজন শুধুই একটি আনুপাতিক হার। চারজনে তিনজন মানে চার লক্ষে তিন লক্ষ। চার লক্ষ ধূমপায়ী মানুষের মধ্যে যদি তিন লক্ষ মানুষ-ই ক্যান্সারে আক্রান্ত না হয়, তাহলে ‘ধূমপানে মানুষের ক্যান্সার হয়’ বলার কোনো সুযোগ-ই থাকে না। ধূমপানে মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে চার লক্ষের মধ্যে তিন লক্ষ মানুষ ক্যান্সার থেকে কিভাবে বেঁচে যায়? যদি অধূমপায়ী কেউই ক্যান্সারে আক্রান্ত না হতো, বরং শুধু যারা ধূমপান করে, তারাই ক্যান্সারে আক্রান্ত হতো, তাহলে চারজন ধূমপায়ীর মধ্যে একজন ক্যান্সারে আক্রান্ত হলেও ধূমপানে ক্যান্সার হয় বলে মনে করার সুযোগ থাকতো।
দ্বিতীয় ফলাফল অনুযায়ী, প্রতি চারজন ক্যান্সারে আক্রান্ত মানুষের মধ্যে একজন ধূমপায়ী হতেই পারে। বাকি তিনজন যেই কারণে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে, ওই একজন যদি ধূমপান না করতো, সেও সেই কারণে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়াকে কেন আমরা অসম্ভব মনে করছি? ধূমপানে যদি মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হতো, তাহলে চারজনে চারজনই অথবা কমপক্ষে তিনজনই ধূমপায়ী হতো। কেন তিনজনই অধূমপায়ী হলো? কারণ ক্যান্সারের কারণ ধূমপান নয়। অন্যকিছু, যা এখনো কেউ নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করতে পারেনি।
অনেকে বলে থাকেন, ধূমপান শুধু ক্যান্সারের একটি কারণ। ক্যান্সারের আরো অনেক কারণ আছে। যারা এমন কথা বলেন, তারা মোটেই না ভেবে বলেন। ধূমপান যদি ক্যান্সারের একটি কারণ হতো, তাহলে ‘চারজন ক্যান্সারে আক্রান্ত মানুষের মধ্যে একজন ধূমপায়ী’ এমন ঘটনাগুলোই শুধু ঘটতো, কিন্তু চারজন ধূমপায়ীর মধ্যে একজন ক্যান্সারে আক্রান্ত, এমন ঘটনা ঘটতো না কোনোভাবে।
What is a risk factor?
A risk factor is something that raises the chance of getting a
disease. Each cancer has its own risk factors. Having risk factors does not
mean that someone will get cancer. Even when a person with a risk factor is
found to have cancer, there’s no way to prove that the risk factor caused the
cancer.
Some risk factors, like a person’s age or gene damage, can’t be
changed. But some risk factors can be controlled. Tobacco use, contact with
secondhand smoke, being in the sun, excess body weight, not being active,
drinking alcohol, and not eating a healthy diet are risk factors that can be
managed. Other risk factors include getting certain viruses and contact with
certain kinds of radiation or chemicals. [https://www.cancer.org/healthy/cancer-causes/general-info/questions.html]
নূর আহমদ
শিক্ষক, রোকনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বশিকপুর, লক্ষ্মীপুর।
0 Comments: