Headlines
Loading...
দীর্ঘজীবন লাভের উপায় (পর্ব-৪৫) : ধূমপান আগে, নাকি ক্যান্সার আগে?

দীর্ঘজীবন লাভের উপায় (পর্ব-৪৫) : ধূমপান আগে, নাকি ক্যান্সার আগে?

ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক এবং উচ্চ রক্তচাপের প্রকৃত কারণ এবং প্রতিরোধের উপায় জানার মাধ্যমে
দীর্ঘজীবন লাভের উপায়






ধূমপান আগে, নাকি ক্যান্সার আগে?


ধূমপান সম্পর্কে নেতিবাচক এ কথাগুলো মানুষের ধারণায় বদ্ধমূল হবার সম্ভাব্য একটি কারণ হচ্ছে, মানুষ যখন প্রথম প্রথম ধূমপান করতে শুরু করেছে, তখন ধীরে ধীরে ধূমপায়ী কেউ কেউ যখন যক্ষা, ব্রংকাইটিস, শ্বাসকষ্ট, ক্যান্সার, স্ট্রোক, হৃদরোগে আক্রান্ত হতে লাগলো, তখন মানুষ এসব রোগের আর কোনো কারণ খুঁজে না পেয়ে (অবশ্য এখনো এসব রোগের প্রকৃত কারণ নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারিত হচ্ছে) ভাবতে লাগলো, সুস্থ-সবল এ লোকটি হঠাৎ রোগাক্রান্ত হলো কেন? ধূমপান না করলে তার হয়তো রোগটি হতো না। তাহলে নিশ্চয়ই ধূমপানই তার এ রোগের জন্য দায়ী। খুব সম্ভবত এভাবেই ধূমপানের বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে একটা ধারণা বদ্ধমূল হয় এবং এ ধারণা একসময় প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতিও পায়।


মানুষ ধূমপানকে যখন এসব রোগের জন্য দায়ী করতে শুরু করলো, তখন একটু চোখ বুলিয়ে দেখেনি, ধূমপান যারা করে না, তারাও এসব রোগে আক্রান্ত হয়। যদি দেখতো, তাহলে ধূমপানকে এসব রোগের কারণ না বলে এসব রোগের কারণ সম্পর্কে নীরব থাকতো বা নতুন করে খুঁজে দেখতো এসব রোগের প্রকৃত কারণ। মানুষ এদিকেও লক্ষ্য করলো না, পৃথিবীতে ধূমপান প্রচলনের আগ থেকেই মানুষ কান্সারে আক্রান্ত হতে শুরু করেছে।

‘ভয়াবহ ব্যাধি ক্যান্সারের ইতিহাস এবং এর চিকিৎসা’ শিরোনামে ‘ডেইলী বাংলাদেশ’ পত্রিকায় ১৬ জুলাই ২০১৮ তারিখে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বলা হয়, ক্যান্সারের গায়ে অনেকেই এঁটে দিয়েছেন আধুনিক আমলের রোগের তকমা। তবে ক্যান্সার রোগের ইতিহাসের বয়সটা হয়তো মানুষের অস্তিত্বের একদম সমানে সমান। প্রাচীন মিশরের মমির হাড়েও পাওয়া গেছে ক্যান্সারের অস্তিত্ব। চিলির আতাকামা মরুভূমিতে মমি হয়ে যাওয়া লাশের হাড়েও পাওয়া গেছে অস্টিওসারকোমার চিহ্ন, সহজভাবে এটিকে হাড়ের ক্যান্সারের সাথেই তুলনা করা যেতে পারে। এমনকি খ্রিস্টের জন্মের ১৬০০ বছর আগের দলিল দস্তাবেজে উল্লেখিত অদ্ভুত কিছু রোগের লক্ষণাদি দেখে গবেষকরা নিশ্চিত হয়েছেন ক্যান্সার সেই আমলেও ছিলো। গ্রিক ইতিহাসবিদ হেরোডটাসের ৪৪০ খ্রিস্টপূর্বের লেখনি থেকে জানা যায়, পারস্যের এক রাণী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন।’

অনেকের মতে, ক্যান্সার মানবজাতির আবির্ভাবের শুরু থেকেই ছিল। American Cancer Society ’র অনলাইনে Early History of Cancer নিবন্ধের Oldest descriptions of cancer
 উপশিরোনামে বলা হয়েছে,‘Human beings and other animals have had cancer throughout recorded history. So it’s no surprise that from the dawn of history people have written about cancer. Some of the earliest evidence of cancer is found among fossilized bone tumors, human mummies in ancient Egypt, and ancient manuscripts. Growths suggestive of the bone cancer called osteosarcoma have been seen in mummies. Bony skull destruction as seen in cancer of the head and neck has been found, too.


Our oldest description of cancer (although the word cancer was not used) was discovered in Egypt and dates back to about 3000 BC. It’s called the Edwin Smith Papyrus and is a copy of part of an ancient Egyptian textbook on trauma surgery. It describes 8 cases of tumors or ulcers of the breast that were removed by cauterization with a tool called the fire drill. The writing says about the disease, “There is no treatment.” [https://www.cancer.org/cancer/cancer-basics/history-of-cancer/what-is-cancer.html]



অপরদিকে উইকিপিডিয়ায় ধূমপানের ইতিহাস সম্পর্কে বলা হয়, ÔÔWith the arrival of the Europeans in the 16th century, the consumption, cultivation, and trading of tobacco quickly spread. The modernization of farming equipment and manufacturing increased the availability of cigarettes following the reconstruction era in the United States. Mass production quickly expanded the scope of consumption, which grew until the scientific controversies of the 1960s, and condemnation in the 1980s.” [https://en.wikipedia.org/wiki/History_of_smoking]

যদি মানুষের অস্তিত্বের শুরু থেকেই ক্যান্সার মানুষকে আক্রমণ করতে আরম্ভ করে আর ধূমপানের প্রচলন মানুষের অস্তিত্বের অনেক অনেক পরে হয়ে থাকে, তাহলে ধূমপানকে ক্যান্সারের জন্য দায়ী করার কি কোনো সুযোগ থাকে?

ধূমপান না করলেও যখন মানুষকে ক্যান্সার আক্রমণ করে থাকে, তখন ধূমপানকে ক্যান্সারের জন্য দায়ী করার কী অর্থ? যখন ত্রিশ-চল্লিশ বছর ধরে ধূমপান করেও লক্ষ লক্ষ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত না হয়েই অন্য কোনোভাবে মৃত্যুবরণ করে, তখনও কি ‘ধূমপানে ক্যান্সার হয়’ বলার কোনো সুযোগ থাকে? পৃথিবীর সব মানুষ একমত হয়ে যদি পৃথিবী থেকে ধূমপানকে তাড়িয়ে দেয়, তাহলে, ক্যান্সারসহ যে রোগগুলোর জন্য ধূমপানকে দায়ী করা হয়, সে রোগগুলো কি ধূমপানের সাথে সাথে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবে?! পৃথিবীর কোনো একটি দেশে যদি তামাক ও সিগারেট উৎপাদন, আমদানী, ক্রয়-বিক্রয় সব নিষিদ্ধ করে দেশটিকে সম্পূর্ণরূপে তামাক ও ধূমপানমুক্ত দেশে পরিণত করা হয়, তাহলে সে দেশে কি কারো ফুসফুস ক্যান্সার বা অন্য কোনো ক্যান্সার হবে না?

বিশ্বব্যাপী ধূমপানবিরোধী ব্যাপক প্রচারণার কারণে ‘ধূমপান ক্ষতিকর’ কথাটি, যারা ধূমপান করে না, তারা তো বিশ্বাস করেই, যারা ধূমপান করে, তারাও প্রায় সবাই চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে। কিন্তু যখন তাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া হয় যে, অসংখ্য ধূমপায়ী আছে, যারা চল্লিশ-পঞ্চাশ বছর ধরে ধূমপান করেও, জীবনে আড়াই লক্ষ থেকে তিন লক্ষ সিগারেট খেয়েও বেঁচে আছে, এমনকি অনেকটা সুস্থতার সাথেই, তখন অনেকে বলে উঠে, ধূমপান ক্ষতি করে, এটা ঠিক, তবে সবার ক্ষতি করে না!! মানুষের সূর পাল্টে যেতে সময় লাগে না।

প্রশ্ন হচ্ছে, শতকরা কত জন ধূমপায়ী ধূমপানের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়? বিএমজে’র যে গবেষণার কথা একটু আগে উল্লেখ করা করা হয়েছে, তাতে দেখা গেছে, শতকরা সাতজন লোক ধূমপানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তা-ও আবার ক্যান্সার নয়, ধূমপানে তারা অন্য রোগে আক্রান্ত হয়। এই সাত জন লোকের রোগাগ্রস্ত হবার জন্য বা এই সাত জনকে যেসব রোগ আক্রমণ করেছে, সেই রোগগুলোর জন্য ধূমপানকে নিশ্চিতভাবে দায়ী করা যেতো তখন, যখন ধূমপান করেন না, এমন সব মানুষ রোগগুলো থেকে মুক্ত থাকতো। শুধু যদি ধূমপায়ীরাই ক্যান্সার, স্ট্রোক, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগের শিকার হতো, তখন নিশ্চয়তার সাথে বলা যেতো, ধূমপানেই এসব রোগ হয়, তবে হয়তো সব ধূমপায়ীর হয় না।

৪৬তম পর্ব:
https://waytogainlonglife.blogspot.com/2022/09/blog-post_54.html

Occupation: Teaching, Hobbies: Writing

0 Comments: