দীর্ঘজীবন লাভের উপায় (পর্ব-৪৮) : ধূমপান নয়, বরং মদপান ক্ষতিকর
ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক এবং উচ্চ রক্তচাপের প্রকৃত কারণ এবং প্রতিরোধের উপায় জানার মাধ্যমে
দীর্ঘজীবন লাভের উপায়
ধূমপান নয়, বরং মদপান ক্ষতিকর
আসলে ধূমপান নয়, মানুষের বেশি ক্ষতি করে মদপান। পরিবার এবং সমাজের বড় শত্রু হচ্ছে মদপান। মানুষকে মাতাল, অর্ধপাগল বা পুরো পাগল করে ছাড়ে মদপান। একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি একটা পরিবারকে ধ্বংসের দিকে নিক্ষেপ করার হাজার হাজার ঘটনা আছে। মদ খেয়ে মানুষ শুধু সাময়িকভাবে মাতাল হয় না, অনেকে পুরো জীবনের জন্য পাগল হয়ে পরিবার ও সমাজের অভিশাপে পরিণত হয়। ধূমপান করে কিন্তু কেউ মাতাল হয় না, পাগল হওয়া দূরের কথা। আর মদপানে অর্থের অপচয়? একবছর নিয়মিত ধূমপানের চেয়ে একবছর নিয়মিত মদপানের খরচের তুলনাটা হবে আকাশ-পাতাল। হেরোইনে আসক্ত হয়ে নিঃস্ব হবার উদাহরণে পৃথিবী ভরপুর। হেরোইন-মদ এসব সেবন করে তিলে তিলে জীবন ধ্বংস করে ফেলার উদাহরণের কোনো অভাব নেই পৃথিবীতে। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, তবু অনেক দেশেই মদপানের চেয়ে ধূমপানকেই জঘণ্য মনে করা হয়। মদপানকে শতভাগ ছাড় দেয়া হয় আর ধূমপানের বিরুদ্ধে নেয়া হয় কঠোর পদক্ষেপ। অস্ট্রেলিয়ার অবস্থা দেখুন। ১৯৯৮ সালে প্রদীপ দেব নামক একজন বাংলাদেশী অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করতে যান। তাঁর প্রথম প্রবাসের প্রথম মাসের স্মৃতিকথা তিনি ‘ইয়ারার তীরে মেলবোর্ন’ নামক একটি বইতে পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা করেন। পরে ‘অস্ট্রেলিয়ার পথে পথে’ নামক আরেকটি বইতে তিনি অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন শহরে তাঁর ভ্রমণ সম্পর্কে লেখেন। তাঁর এই দু’টি বই থেকে দু’টি ঘটনা এখানে উল্লেখ করছি।
১. ধূমপান এবং ফায়ার অ্যালার্ম
‘‘হোস্টেলে ফিরে এসে দেখলাম বেশ জমজমাট অবস্থা এখন। টিভি রুমে অনেকে বসে অনুষ্ঠান দেখছে। কিচেনে রান্না করছে কেউ কেউ। আমি আর মিকি এখানে সময় না কাটিয়ে দোতলায় উঠে এলাম। পরস্পর ‘গুড নাইট’ বলে যে যার রুমে ঢুকে গেলাম।
সারাদিন প্রচুর ঘোরাঘুরি হয়েছে। ঘুমিয়ে পড়তে দেরি হলো না। কতক্ষণ ঘুমিয়েছি জানি না, হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলো ফায়ার অ্যালার্মের শব্দে। কুইন্সল্যান্ডে যখন তখন আগুন লেগে যায়। আতঙ্কে ছটফট করতে করতে আমার ছোট্ট ব্যাগটা টেনে নিয়ে বেরিয়ে গেলাম রুম থেকে। ব্যাগে আমার পাসপোর্ট আর ওয়ালেট আছে।
রুম থেকে বেরিয়ে দেখলাম মিকির রুমের দরজা খোলা। নিচে কারো কোনো সাড়া শব্দ নেই। অ্যালার্ম বেজেই চলেছে। ফায়ার এক্সিট দিয়ে নিচে নামতে গিয়ে দেখি ঝাপসা অন্ধকারে সিঁড়ির মাঝখানে দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছে মিকি। আমাকে দেখতে পেয়ে বললো, ‘‘হাই!’’
মিকির কথা জড়ানো। ভাবলাম কাঁচা ঘুম থেকে উঠেছে বলেই হয়তো।
‘‘হোয়াট হ্যাপেন?’’ নামতে নামতে জিজ্ঞেস করলাম।
‘‘সিগারেট ধরিয়েছিলাম রুমের মধ্যে। সাথে সাথে ফায়ার অ্যালার্ম বেজে উঠেছে। ওটা যে এত সেন্সেটিভ আমার জানা ছিল না।’’
মিকির মুখে তীব্র এলকোহলের গন্ধ। শুধু সিগারেট নয়, মদও টেনেছে সে প্রচুর।’’ [অস্ট্রেলিয়ার পথে পথে, পৃষ্ঠা: ১৫৯-১৬০, প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি ২০১৫]
৪৯তম পর্ব:
https://waytogainlonglife.blogspot.com/2022/09/blog-post_81.html
0 Comments: